গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন সংস্থাগুলোর উন্নয়ন করা আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট এখন থেকে হস্তান্তর করতে আর কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে না। শুধু নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে সাব-রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে নিবন্ধন করলেই জমি বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা যাবে। গত এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর-পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় সেবা সহজীকরণ, ইজারা গ্রহিতাদের দুর্ভোগ কমানো ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সাত দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এত দিন উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান বা বিক্রয়সহ হস্তান্তর সংক্রান্ত দলিল সম্পাদন কিংবা ঋণ নিতে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন লাগত। এখন থেকে এসবের জন্য আর অনুমতি লাগবে না। তবে প্লট বিভাজন, একত্রীকরণ বা মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আগের নিয়মই বহাল থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দলিল হস্তান্তরের সময় ফ্ল্যাটের জন্য ২ শতাংশ এবং প্লটের জন্য ৩ শতাংশ ফি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হবে দলিল গ্রহিতাকে। এই অর্থ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অর্থনৈতিক কোড অনুযায়ী নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনবিআর) হিসেবে জমা হবে।
হস্তান্তরের পর দলিলের এক কপি ও নামজারি সংক্রান্ত নথি ৯০ দিনের মধ্যে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না দিলে দৈনিক ৫০ টাকা হারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। দলিল বা নামজারি নথি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানকে মালিকানা হালনাগাদ করতে হবে। এসব তথ্য রেজিস্টার্ড ডাক ছাড়াও ই-মেইল বা অন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দলিল গ্রহিতাকে পাঠাতে হবে। ইজারা মেয়াদ শেষ হলে (৯৯ বছর পর) তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হবে, আলাদা ফি দিতে হবে না। তবে কোনো অবস্থাতেই ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া প্লট ভাগ, একত্রীকরণ বা মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তন করা যাবে না।
প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প খাতের প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর এবং নামজারির ক্ষেত্রে আগের মতোই অনুমোদন লাগবে। একইভাবে যেসব প্লট বা ফ্ল্যাটে মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে, পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত বা বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে (জানুয়ারি ২০০৯ থেকে জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত), সেগুলোর ক্ষেত্রেও অনুমতি নিতে হবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কোন কোন আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট অনুমোদন ছাড়াই হস্তান্তর করা যাবে তার তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা হবে। যদি প্রকাশিত তালিকায় কোনো ভুল বা ত্রুটি থাকে, তা সংশোধনের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে এসব প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানিয়ে আসছি। এখন হয়রানি কমবে বলে আমরা আশা করি।”

