যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের জুতা রপ্তানি নতুন গতিতে এগোচ্ছে। বিশেষ করে চামড়াবিহীন জুতার চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খাতটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই–অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে চামড়ার জুতা রপ্তানি বেড়েছে ২১ শতাংশ, আর চামড়াবিহীন জুতার রপ্তানি তিনগুণেরও বেশি (১৯১ শতাংশ)। সামগ্রিকভাবে, দেশের জুতা রপ্তানি ৩২ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে
জুতাশিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, নতুন মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি জুতায় আগ্রহ দেখাচ্ছে। সক্ষম প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত ক্রয়াদেশ নিতে পারছে এবং উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। তবে বড় ধরনের ব্যবসা টেকসই করতে হলে দেশেই জুতার কাঁচামাল উৎপাদনের দিকে বিনিয়োগ প্রয়োজন। এছাড়া, প্রতিযোগী দেশ যেমন ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় বাংলাদেশের লিডটাইম বেশি, যদিও খরচ কম।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি চার মাসে বাংলাদেশের জুতা রপ্তানি ৪২ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বড় বাজার হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের অংশ বেড়ে এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছেছে। চামড়ার জুতার রপ্তানি হয়েছে ১২ কোটি ডলার, যা আগের বছরের ১০ কোটি ডলারের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।
চামড়াবিহীন জুতার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এনপলি ফুটওয়্যার চলতি বছর থেকে দুটি মার্কিন কোম্পানির কাছে জুতা রপ্তানি করছে। তাদের কারখানায় দিনে ১৪ হাজার জোড়া জুতা উৎপাদিত হচ্ছে, এবং বিক্রয় আদেশের ১৫ শতাংশই এখন মার্কিন বাজারের। প্রতিষ্ঠানটির এমডি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, “মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো চীন থেকে ক্রয়াদেশ সরাচ্ছে, ফলে বাংলাদেশের জুতার সুযোগ বেড়ে গেছে।”
গত জুলাইতে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর সংশোধিত পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে, যা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের জন্য ২০ শতাংশ। চীনের পণ্যে শুরুতে একাধিক গুণ বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। এতে চীনের ক্রয়াদেশ কিছুটা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি পরিস্থিতি উন্নতি করছে।
আরএফএল গ্রুপের রপ্তানি বিষয়ক এমডি আর এন পাল বলেন, “চীনের ওপর শুল্ক যাই হোক, যেসব মার্কিন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে জুতা উৎপাদনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে, তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। আশা করি, যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি আরও বাড়বে।”

