যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী এলি লিলির বাজারমূল্য ১ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ কোটি ডলার ছুঁয়েছে। স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ ও ডায়াবেটিসের ওষুধের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানির শেয়ার শুক্রবার প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে ১,০৫১ ডলারে পৌঁছায়। এতে প্রথম ওষুধ কোম্পানি হিসেবে ‘ট্রিলিয়ন ডলার ক্লাবে’ এলি লিলি প্রবেশ করেছে।
এ চাহিদা বৃদ্ধির মূল কারণ হলো ওবেসিটি বা স্থূলতা নিয়ন্ত্রণের নতুন প্রজন্মের ওষুধ। গত দুই বছরে উচ্চ কার্যকারিতার এসব ওষুধ বাজারে আসার পর স্বাস্থ্যসেবা খাতে এটি সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল বিভাগে পরিণত হয়েছে। এলি লিলির টিরজেপাটাইড-ভিত্তিক দুটি ওষুধ—টাইপ২ ডায়াবেটিসের জন্য মাউনজারো এবং স্থূলতার জন্য জেপবাউন্ড—বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ওষুধ হিসেবে মের্কের কিট্রুডাকে ছাড়িয়ে গেছে।
স্থূলতা প্রতিরোধী ওষুধের বাজারে প্রথমে নোভো নরডিস্ক এগিয়ে ছিল। তবে ২০২১ সালের শুরুর দিকে কোম্পানির ওয়েগোভির সরবরাহ সংকট দেখা দিলে এলি লিলি দ্রুত এগিয়ে যায়। লিলির ওষুধগুলো ক্লিনিক্যাল কার্যকারিতায় বেশি শক্তিশালী প্রমাণিত হয়েছে। উৎপাদন ও বিতরণ বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছে।
বাজারমূল্য বৃদ্ধির কারণে ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে এলি লিলির শেয়ার অন্য কোম্পানির তুলনায় অনেক বেশি। এলএসইজির তথ্য অনুযায়ী, আগামী ১২ মাসে প্রত্যাশিত আয়ের তুলনায় কোম্পানির শেয়ারের প্রাইস–টু–আর্নিংস অনুপাত প্রায় ৫০ গুণ। বিনিয়োগকারীরা স্থূলতা নিরাময়ের ওষুধের বাজারকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মনে করছেন।
২০২৩ সালের শেষভাগে জেপবাউন্ড বাজারে আসার পর লিলির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। একই সময়ে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ বেড়েছে ৫০ শতাংশের কিছু বেশি। সর্বশেষ প্রান্তিকে লিলি স্থূলতা ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী পণ্যের বিক্রি থেকে ১,৯০৯ কোটি ডলার আয় করেছে। মোট আয়ের পরিমাণ ছিল ১,৭৬০ কোটি ডলার।
বিএমও ক্যাপিটাল মার্কেটসের বিশ্লেষক ইভান সাইগারম্যান বলেন, “বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির বিপাকীয় স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পণ্যের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যে আস্থা রাখছেন। বর্তমান বাজারমূল্য তার বড় প্রমাণ। স্থূলতা নিরাময়ে ওষুধ প্রতিযোগিতায় লিলিই বিনিয়োগকারীদের পছন্দ।”
বিশ্লেষকদের অনুমান, ২০৩০ সালের মধ্যে স্থূলতা নিয়ন্ত্রণের ওষুধের বৈশ্বিক বাজার ১৫ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। নোভো নরডিস্ক ও এলি লিলি দু’টি কোম্পানি সেই বাজারের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করবে। এখন বাজারের নজর লিলির নতুন ওরাল ওবেসিটি ওষুধ অরফোরগ্লিপ্রনের দিকে। এটি আগামী বছর অনুমোদন পেতে পারে। সিটি গ্রুপের বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, নতুন প্রজন্মের জিএলপি-১ ওষুধের বিক্রি ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এবং অরফোরগ্লিপ্রনও এর সুফল পেতে পারে।

