সাধারণ ও প্রবাসী ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা একটি বিনিয়োগবান্ধব ‘আইপিও নীতিমালা’ প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ‘পাবলিক অফার অব ইকুইটি সিকিউরিটিজ রুলস-২০২৫’-এর খসড়ার শেয়ার বরাদ্দ কোটা সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য সুবিধাজনক নয়।
গত ৩০ অক্টোবর বিএসইসিকে খসড়ার ওপর মতামতের জন্য তাদের অংশের মতামত পাঠানো হয়েছে। খসড়ার ২২ নম্বর পৃষ্ঠায় দেখা যায়, আইপিও শেয়ার বরাদ্দের বড় অংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে চলে যাচ্ছে। বর্তমান খসড়ায় ফিক্সড প্রাইস মেথডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কোটা ৩০ শতাংশ ও মিউচুয়াল ফান্ডের ২০ শতাংশ রাখা হয়েছে। বুক বিল্ডিং মেথডে প্রাতিষ্ঠানিক ও মিউচুয়াল ফান্ড মিলিয়ে ৬০ শতাংশ বরাদ্দ। আগে এ কোটা যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ৭০ শতাংশ ছিল।
এই পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সুবিধাভোগী হলেও, সাধারণ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৬ লাখের বেশি। তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ফিক্সড প্রাইস মেথডে ৩৫ শতাংশ এবং বুক বিল্ডিং মেথডে ২৫ শতাংশ। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, ‘অন্যান্য’ কোটা আগের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। এতে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তাদের দাবি, প্রাতিষ্ঠানিক ও মিউচুয়াল ফান্ডের কোটা কমিয়ে ‘অন্যান্য’ ৬০ শতাংশ এবং নন-রেসিডেন্ট ছাড়া শুধু এনআরবিকে ১০ শতাংশ কোটা দেওয়া উচিত।
মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য পূর্বে ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকলেও খসড়ায় তা ২০ শতাংশ রাখা হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে না। তাই আগের মতো ৫ শতাংশ বরাদ্দই যথেষ্ট।
প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা বলছেন, খসড়ার ২২ নম্বর পৃষ্ঠায় NRB+NR ৫ শতাংশ বরাদ্দে তাদের আলাদা অবস্থান নেই। তারা মনে করেন, আইপিওতে নন-রেসিডেন্টদের না রাখা ভালো। আগে ২০২০ পর্যন্ত এনআরবির জন্য ১০ শতাংশ বরাদ্দ থাকত। ২০২১ সালের মে মাসের পরে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ কমার মূল কারণও এনআরবি কোটার হ্রাস।
বিনিয়োগকারীদের ধারণা, আইপিওতে এনআরবির জন্য আলাদা ১০ শতাংশ কোটা থাকলে বিদেশি মুদ্রার আগমন বাড়বে। তারা এফসি অ্যাকাউন্টে ডলার পাঠালে প্রণোদনা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বলেন, এইচএনআই কোটায় শেয়ার বরাদ্দ রাখা হলো বড় বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে। তারা দাবি করছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীর সুবিধার জন্য Others (RB)=60%, NRB=10%, EI=20%, MF=5%, Employee=5% বরাদ্দ রাখা হোক।
তারা আশা করছেন, সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আইপিও আকারে তালিকাভুক্ত হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও লাভবান হবেন। বরাদ্দ প্রো-রাটা নয়, বরং লটভিত্তিক লটারির মাধ্যমে হওয়া উচিত।
খসড়ায় আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া স্পষ্ট নয়। টাস্কফোর্সের খসড়ায় কিছু নির্দেশনা থাকলেও, বিনিয়োগকারীরা চাইছেন, আবেদনের ক্ষেত্রে ‘শেয়ার বাই’ নিয়ম পুনরায় চালু করা না হোক। তারা জানান, এই নিয়মের কারণে অনেকেই লোকসান ভোগ করছেন।

