চলতি ২০২৫-২৬ কর বছরে অনলাইনে কর রিটার্ন দাখিলে মানুষের আগ্রহ যেমন বেড়েছে, তেমনি এনবিআরও পাচ্ছে উৎসাহজনক সাড়া। ইতোমধ্যে দেশে ২০ লাখেরও বেশি করদাতা ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন—শনিবার (২৯ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ।
তিনি জানান, যারা এখনো রিটার্ন জমা দেননি, তারা যেন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে কর দাখিল করেন।
সরকার গত বছরের আগস্টে ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করে। এরপর এনবিআর একটি বিশেষ আদেশ জারি করে জানায়—৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে থাকা বাংলাদেশি, মৃত করদাতার পক্ষের আইনি প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ছাড়া বাকি সব ব্যক্তি করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এনবিআর বলছে, যাদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা নেই, তারাও চাইলে ই-রিটার্ন করতে পারছেন। তবে কেউ যদি অনলাইন সিস্টেমে নিবন্ধন করতে না পারেন বা কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যায় পড়েন, তাহলে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করতে হবে। যথোপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনে ওই করদাতা কাগজে রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
এ বছর করদাতার পক্ষে তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন, যা অনেকের জন্য সুবিধা বাড়িয়েছে।
ই-রিটার্ন সিস্টেমে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের হিসাব শুধু এন্ট্রি করলেই রিটার্ন জমা হয়ে যায়—কোনো নথি আপলোড করার প্রয়োজন নেই। এছাড়া ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং কিংবা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস—বিকাশ, নগদসহ—যেকোনো মাধ্যমেই সহজে কর পরিশোধ করা যাচ্ছে।
ফলে করদাতাদের আর ব্যাংক বা কর অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা নেই; পুরোটাই করা যাচ্ছে ঘরে বসে।
অনেকে যেন অনলাইন সিস্টেম ব্যবহার করতে অসুবিধায় না পড়েন, এজন্য এনবিআর গত বছরের মতো এ বছরও করদাতাদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণ চালিয়েছে। তাদের দাবি—এই উদ্যোগের কারণেই ই-রিটার্ন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বেড়েছে।

