বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণ আদায় কার্যকর করতে অর্থ ঋণ আইনের কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি ও ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া দ্রুততর করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভায় তিনি এ তথ্য জানান। সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে। এতে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা নিশ্চিত করা এবং দেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও উন্নত করা লক্ষ্য ছিল।
ড. আহসান বলেন, “প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দেশের জাতীয় সম্পদ। কোনো ব্যক্তির কারণে আমরা কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে পারি না। এসব প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান দিয়েছে। তবে আইনের নিয়ম অনুযায়ী যারা দায়িত্ব পালন করেননি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ব্যক্তিকে ছাড় দেব না, আইন সব ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। এই নীতি এখনও আমাদের মূলমন্ত্র। এ পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়নি।”
তিনি ব্যাংক খাতের বর্তমান সংকট নিয়ে বলেন, “সঙ্কট কাটাতে আমাদের অন্তত ৭০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তবে একবারে এত বড় অর্থ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আগামী অর্থ বছরের বাজেট থেকে প্রথম ধাপে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক খাতে সরবরাহ করা হবে। এতে খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে সহায়তা মিলবে এবং ব্যাংক খাত আরও মজবুত হবে।”
ড. আহসান দেশের ব্যাংক খাতের অবস্থা ব্যাখ্যা করে বলেন, “দেশে প্রচুর ছোট ব্যাংক রয়েছে, যেগুলোকে আমরা ‘লিলিপুট’ ব্যাংক বলি। এগুলো স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংক আমরা তৈরি করতে পারিনি। এটি আগামী ২০ বছরেও সম্ভব নয়। তবে যদি সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া হয়, ১০–১৫ বছরের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানের একটি ব্যাংকে পরিণত হতে পারে।”
তিনি সভায় ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন এবং খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারি সহায়তার গুরুত্বও আলোচনা করেন। গভর্নর বলেন, “আইনগতভাবে শক্ত ব্যবস্থা নিলে খেলাপি ঋণ হ্রাস পাবে। এতে ব্যাংক খাত আরও স্থিতিশীল হবে এবং বিনিয়োগকারীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবে।”

