বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বড় ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে। তিনি বলেন, দেশের ভৌগোলিক অবস্থান এই প্রসারের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি করছে। চার ঘণ্টার ভেতর প্রায় আড়াইশ কোটি মানুষ বাস করছে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও বাড়াচ্ছে।
আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিডা চেয়ারম্যান জানান, বীতগতম শতকে অর্থনৈতিক বিপ্লব ইউরোপ ও আমেরিকায় হলেও, আগামী শতকে অর্থনৈতিক প্রসার হবে এশিয়ায়। তিনি বলেন, বড় বিনিয়োগকারীরা এখনও বাংলাদেশকে মূলত ম্যানুফ্যাকচারিং হাব বা ফ্যাক্টরি হিসেবে দেখেন। তবে বড় সমস্যা হলো ‘ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ’ তৈরি না হওয়া। এটি মোবাইল ফোন, অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, জুতো, টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস বা চামড়া—সব ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশকে তিনি ‘তরুণ দেশ’ হিসেবে অভিহিত করে জানান, মানুষের গড় বয়স মাত্র ২৭ বছর। তাই দেশের উদ্যোক্তারা অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি অবদান রাখার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন।
রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার গুরুত্বেও জোর দেন বিডা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, শুধু টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস নয়, রপ্তানিতে বৈচিত্র্যকরণ (ডাইভারসিফিকেশন) প্রয়োজন। আংশিক রপ্তানিকারকদের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে এসএমই খাতকে সম্পূর্ণ ইন্টিগ্রেটেড রপ্তানিতে সহায়তা করবে।
দেশে ব্যবসা শুরু করা এখনও কঠিন এবং ব্যাংকের নিবন্ধন প্রক্রিয়া জটিল বলে স্বীকার করেন চৌধুরী আশিক মাহমুদ। তিনি বলেন, তবে একটি অ্যাপের মাধ্যমে একক ফর্মে নিবন্ধন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা সহজ করার চেষ্টা চলছে। এতে ক্ষুদ্র থেকে বড় সব বিনিয়োগকারী সমান সুবিধা পাবেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি জানান, ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সরাসরি অনলাইনে নিবন্ধন ও তথ্য দেখতে পারবেন। বিদ্যুৎ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নতি হলেও এখনও অনেক দূর যেতে হবে। মেলায় অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের প্রশংসা করে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “মেলায় অংশগ্রহণকারীদের ৬০ শতাংশ নারী, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জন্য অবশ্যই বড় কিছু করা প্রয়োজন।”

