বাংলাদেশ রেলওয়েকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র বা পিএসআর জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন থেকে রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাকে আর রিটার্ন দাখিলের কোনো নথি বা প্রমাণ এনবিআরের কাছে জমা দিতে হবে না। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেলওয়ে আয়করের আওতায় নেই—এ বিষয়টি স্পষ্ট করে গতকাল রোববার ৭ ডিসেম্বর এনবিআর এক আদেশ জারি করে।
এনবিআরের কর নীতি উইং থেকে জারি হওয়া ওই আদেশে সই করেন দ্বিতীয় সচিব (কর আইন–১) নুসরাত ফারজানা। আদেশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এটি করযোগ্য সত্তা নয়। তাই আয়কর আইন ২০২৩-এর ধারা ২৬৪-এর উপধারা (৪)-এর ক্ষমতাবলে রেলওয়েকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
এর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের আর কোনো পর্যায়ে রিটার্ন সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখানোর প্রয়োজন থাকবে না। এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে রিটার্ন জমা–সংক্রান্ত নানা জটিলতা ও প্রশাসনিক ধাপ বহু বছর ধরেই ভোগান্তি তৈরি করছিল। অনেক সংস্থাকে আয়করের আওতায় না থাকলেও নিয়মগত কারণে কাগজপত্র জমা দিতে হতো। এতে প্রক্রিয়াগত জটিলতা তৈরি হতো এবং সময় নষ্ট হতো। নতুন নির্দেশনার ফলে রেলওয়ের ক্ষেত্রে এমন জটিলতা আর থাকবে না।
বিভিন্ন সূত্রও জানায়, সরকারি দপ্তরগুলোতে কর-সংক্রান্ত নথি দাখিল, যাচাই ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ব্যাঘাত দেখা দিত। দপ্তরভেদে কাগজপত্র জমা ও প্রক্রিয়াকরণ সমন্বিত না হওয়ায় সময় ক্ষেপণ হতো এবং অতিরিক্ত প্রশাসনিক চাপ তৈরি হতো। এনবিআরের এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে রেলওয়ের কার্যক্রম আরও সহজ হবে এবং আর্থিক নথি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, এনবিআর সূত্র জানায়, সরকারি সংস্থাগুলোর কর প্রসঙ্গে একাধিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। আয়কর আইন ২০২৩ কার্যকরের পর করমুক্ত ও করযোগ্য সংস্থার তালিকা স্পষ্ট করার প্রয়োজন দেখা দেয়। রেলওয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে করযোগ্য নয়—এ অবস্থান আগের মতোই বহাল থাকায় নতুন করে প্রমাণপত্র জমা নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেই এনবিআর সিদ্ধান্ত দেয়।
নতুন নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার পর রেলওয়ের আর কর–সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা বা অতিরিক্ত প্রশাসনিক কার্যক্রমে জড়াতে হবে না। রেলওয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এতে সংস্থার আর্থিক কার্যক্রম আরও দ্রুত ও সহজ হবে।

