জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ব্যবসায়ীদের জন্য ভ্যাট নিবন্ধন বা বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) বাধ্যতামূলক করার দিকে এগোচ্ছে। ট্যাক্সের মতোই নির্দিষ্ট কিছু সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে জাতীয় ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেন, “টিআইএন না থাকলে বা ট্যাক্স রিটার্ন জমা না দিলে যেমন অনেক সেবা পাওয়া যায় না, তেমনি ভ্যাটের ক্ষেত্রেও কিছু সেবা ধীরে ধীরে বাধ্যতামূলক করা হবে।”
তিনি জানান, বিষয়টি আগামী বছর আইনে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। “গত বাজেটেই শুরু করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সম্ভব হয়নি,” যোগ করেন তিনি।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৪৩ ধরনের সেবা গ্রহণের সময় ট্যাক্স রিটার্ন জমার প্রমাণ বা পিএসআর (প্রুফ অব সাবমিশন অব রিটার্ন) দেখানো বাধ্যতামূলক। ফলে টিআইএনধারীর সংখ্যা এবং রিটার্ন জমার হার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েছে। বর্তমানে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখের বেশি, আর রিটার্ন জমা হয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগামী দুই বছরে ৩০ লাখের বেশি প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতার সংখ্যা মাত্র ৬ লাখ ৪৪ হাজার, যা দেশের ব্যবসার প্রকৃত পরিসরের তুলনায় খুব কম। চলতি মাসের মধ্যেই আরও এক লাখ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার কাজ চলছে।
তিনি বলেন, “সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভ্যাট নেট খুব ছোট। জাতীয় বিভিন্ন জরিপ ও ব্যবসায়িক বাস্তবতার সঙ্গে এই সংখ্যার কোনও সামঞ্জস্য নেই।”
আলোর গত আলোচিত বিষয়—আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানো হবে কি না—প্রশ্নে তিনি জানান, “রাষ্ট্রের স্বার্থই সবার আগে। প্রয়োজন হলে সরকার সাময়িকভাবে কর কমানোর সুযোগ দিতে পারে। পরবর্তী সংসদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।” তিনি আরও বলেন, “যদি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এটি প্রয়োজন হয় এবং নীতিনির্ধারকরা নির্দেশ দেন, আমরা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেব।”
আজ (১০ ডিসেম্বর) দেশজুড়ে জাতীয় ভ্যাট দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এবারও ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে এনবিআর। এ বছরের প্রতিপাদ্য—’সময়মতো নিবন্ধন করুন, সঠিকভাবে ভ্যাট দিন।’ আগামীকাল থেকে ভ্যাট নিবন্ধন বাড়াতে মাসব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করবে রাজস্ব বোর্ড।

