দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখায় ৮৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। তারা বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রেরণ, বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানি এবং দেশে শিল্প খাতে বিনিয়োগের জন্য ২০২৬ সালের সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গত রবিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
দেশে শিল্প খাতে সরাসরি বিনিয়োগকারী অনিবাসী বাংলাদেশি শ্রেণিতে একজন, বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী শ্রেণিতে ৭৫ জন এবং বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক শ্রেণিতে ১০ জন নির্বাচিত হয়েছেন। ৮৬ জন সিআইপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রবাসী, ৪১ জন। এছাড়া ওমানের ৭ জন, যুক্তরাজ্যের ৬ জন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার থেকে ৫ জন করে নির্বাচিত হয়েছেন। সৌদি আরব, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে থাকা প্রবাসীরা তালিকায় রয়েছেন।
৩৩ জন সিআইপি চট্টগ্রামের। এছাড়া কুমিল্লা, নোয়াখালী, কক্সবাজার, চাঁদপুর, ঢাকা, মৌলভীবাজার, জামালপুর, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝালকাঠি ও নরসিংদীর প্রবাসীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
কারা সিআইপি:
শিল্প খাতে সরাসরি বিনিয়োগকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কল্লোল আহমদ (সিলেট) সিআইপি হয়েছেন। বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরক হিসেবে সৌদি আরবপ্রবাসী আবদুল করিম, অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী মো. শহীদুল ইসলাম, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী গোলাম মতুর্জা, ইউএই প্রবাসী মোহাম্মদ রুবেল এবং হংকং প্রবাসী শাহনাজ মাহমুদ সিআইপি হয়েছেন।
অন্যদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ ওসমান গণি (ইউএই), মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান (যুক্তরাষ্ট্র), মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (ইউএই), মো. শাহেদুজ্জামান (সিঙ্গাপুর), মুহাম্মদ আবুল বশর (ইউএই), সৈয়দ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (হংকং), মো. জসিম উদ্দীন (কাতার), তাহসিন উদ্দিন খান (যুক্তরাজ্য), মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (ইউএই), আবদুল গনি (সৌদি আরব), মো. সামছুজ্জামান (ইউএই), মোহাম্মদ শফিউল আলম (ইউএই), আজিমুল হক (ওমান), রাফান সিরাজ (কানাডা), মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (ইউএই), ওমর ফারুক চৌধুরী (কাতার) এবং আরও অনেকে।
বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক শ্রেণিতে সিআইপি হয়েছেন হংকংয়ের মো. মাহমুদুর রহমান খান, যুক্তরাজ্যের শাহ সেলিম হোসেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিলন কান্তি চৌধুরী, কুয়েতের মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন, ওমানের রফিকুল ইসলাম, থাইল্যান্ডের মাইনুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রের মারুফা আহমেদ, কাতারের শওকত আলী, কুয়েতের আবুল কাশেম এবং ইউএইর মোহাম্মদ জুলফিকার।
সিআইপি সুবিধা:
নির্বাচিত এনআরবি সিআইপিরা সরকারি পরিচয়পত্রের মেয়াদকালে সচিবালয়ে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। তারা সরকারি নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হওয়া, দেশে-বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পাবেন। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে অতিথি এবং বাংলাদেশে উপস্থিত থাকলে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি করপোরেশন সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন।
এছাড়া উড়োজাহাজ, রেল, সড়ক ও জলযানে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, স্ত্রী-সন্তানসহ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য কেবিন সুবিধা, বিদেশি বিনিয়োগকারীর মতো সুযোগ-সুবিধা এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ‘চামেলি’ ব্যবহার ও স্পেশাল হ্যান্ডলিং সুবিধা পাবেন।

