জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদার সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কেএমপি চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানায়, মোতালেব শিকদারের শারীরিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সোনাডাঙ্গার গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছে দুর্বৃত্তরা তার মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়েছে। তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) জানায়, মোতালেব ‘মুক্তা হাউজ’ নামক বাসায় গুলিবিদ্ধ হন।
কেএমপি মিডিয়া সেল থেকে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুরুতে পুলিশকে মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়া হয়েছিল যে রাস্তায় গুলি হয়েছে। মোতালেব শিকদার সোনাডাঙ্গা এলাকার আল আকসা মসজিদ রোডের ‘মুক্তা হাউজ ১০৯’ নামক বাসার নিচতলায় গুলিবিদ্ধ হন। এটি তার নারী সঙ্গী তন্বীর বাসা, যেখানে তিনি দুই মাস ধরে বসবাস করছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে পাঁচটি খালি বিদেশি মদের বোতল, পিস্তলের গুলির খোসা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি এবং অনৈতিক কার্যকলাপের আলামত। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুজন ব্যক্তি আগের রাতে সাড়ে ১২টায় মোতালেবের বাসায় প্রবেশ করেন।
পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোতালেব শিকদার খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু এবং তার সহযোগী সৌরভের সঙ্গে চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন। পূর্ব থেকেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। পুলিশের ধারণা, চাঁদার অর্থের ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে অন্তর্কোন্দলের কারণে এই হামলা হতে পারে।
কেএমপির উপ কমিশনার (দক্ষিণ বিভাগ) তাজুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তবে মূল ঘটনার সত্যতা জানতে তদন্ত চলছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ মোতালেব বর্তমানে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তার সিটি স্ক্যান রিপোর্ট স্বাভাবিক এবং তিনি শঙ্কামুক্ত।
মুক্তা হাউজের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার বলেন, তন্বী নামে এক তরুণী এক মাস আগে বাসাটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিওকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং প্রায়ই বাইরে থাকতেন। তার কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া চলছিল। পরে বাড়ির অন্যদের মাধ্যমে তার অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানা যায়। এরপর এই মাসে তাকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়, তবে ছাড়ার আগে ঘটনাটি ঘটেছে।

