জ্বালানি খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে আয়ের তথ্য ও ভ্যাট রিটার্নের মধ্যে ১ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকার ফারাক দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে কোম্পানির স্থায়ী আমানত (এফডিআর)ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে মতামত দিয়েছে হক ভট্টাচার্য দাস অ্যান্ড কোম্পানি, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।
নিরীক্ষক জানায়, ২০২৪-২৫ সালে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে আয়ের পরিমাণ ২৯ হাজার ৩৪৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, কিন্তু ভ্যাট রিটার্নে আয় ২৭ হাজার ৫০৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। ফলে ১ হাজার ৮৩৮ কোটি ১ লাখ টাকার গরমিল তৈরি হয়েছে। নিরীক্ষক আরও উল্লেখ করেছেন, মেঘনা পেট্রোলিয়াম মোট ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর হিসেবে বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে:
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক: ১৬৯ কোটি ১ লাখ
- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক: ২১১ কোটি ৭৩ লাখ
- পদ্মা ব্যাংক: ৭ কোটি ৫০ লাখ
- ইউনিয়ন ব্যাংক: ১৫৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা
এই ব্যাংকগুলো বর্তমানে তারল্য সংকটে, ফলে কোম্পানি ৬১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সুদ আয় দেখাতে পারেনি। বিনিয়োগ নগদায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে চিঠি পাঠানো হলেও কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১৪ টাকা ২৯ পয়সা, আগের বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ১২ টাকা ৭৩ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২৯২ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০২৪-২৫ হিসাব বছরে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ইপিএস এ বছর হয়েছে ৬১ টাকা ৩৯ পয়সা, আগের বছর ৫০ টাকা ১১ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত এনএভিপিএস ২৭৮ টাকা ৫১ পয়সা।
গত বছর, ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ১৭০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। ইপিএস ছিল ৫০ টাকা ১১ পয়সা, আগের বছর ৪০ টাকা ৮৬ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত এনএভিপিএস ২৩৪ টাকা ১২ পয়সা। ২০২২-২৩ হিসাব বছরে লভ্যাংশ ছিল ১৬০ শতাংশ। ইপিএস ৪০ টাকা ৮৬ পয়সা, আগের বছর ২৯ টাকা ২৫ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত এনএভিপিএস ১৯৮ টাকা ৯৪ পয়সা।
মেঘনা পেট্রোলিয়াম ২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি, পরিশোধিত মূলধন ১০৮ কোটি ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, এবং রিজার্ভে রয়েছে ২ হাজার ৪১৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৮২ লাখ ১৬ হাজার ১০৮, যার:
- ৫৮.৬৭% সরকারের হাতে,
- ৩২.৭৯% প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে,
- ০.৯% বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হাতে,
- ৮.৪৫% সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

