বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এমন পর্যায়ের পচন ধরেছে যে কেবল নতুন কোনো শিক্ষা কমিশন গঠন করে এর সমাধান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তাঁর মতে, শিক্ষার মৌলিক সমস্যাগুলো আগে ঠিক না করলে কমিশন গঠন কেবল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবেই থেকে যাবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত জাতীয় সম্মেলন ‘ইউথ পারসপেকটিভস অন স্যোশাল প্রগ্রেস: গ্রাসরুটস, নেটওয়ার্কস অ্যান্ড লিডারশিপ ভয়েসেস’-এর উদ্বোধনী সেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখেছি, দেশের ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকবিহীন অবস্থায় আছে। এমন পরিস্থিতিতে কেবল একটি শিক্ষা কমিশন দিয়ে কিছু ঠিক করা সম্ভব নয়। কমিশনের ওপর এমন দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া নিজেই একধরনের বিব্রতকর সিদ্ধান্ত হতো।”
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তিনটি শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রতিটি কমিশনের রিপোর্টেই ভালো সুপারিশ ছিল। সেগুলো বাস্তবায়ন না করেই নতুন কমিশনের কথা বলা যুক্তিসঙ্গত নয়।”
তিনি তরুণদের মানসিক অস্থিরতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জুলাই আন্দোলনের সময়কার নৃশংসতা ও প্রাণহানিকে তিনি এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “যে তরুণেরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দেশকে বদলে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা আছে। কিন্তু কীভাবে পরিবর্তন আনবেন, সেটি স্পষ্ট নয়। তাঁদের পাশে থেকে দিকনির্দেশনা দেওয়া প্রবীণদের দায়িত্ব।”
অবরোধ সংস্কৃতি নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “অস্থিরতার একটি নেতিবাচক দিক হলো দাবি আদায়ে মহাসড়ক অবরোধ, যা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য উদ্বেগজনক। তবে ইতিবাচক দিকও আছে—গাড়ি ভাঙচুরের সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু অবরোধ থেকে গেছে।”
তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা নিয়ে তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বড় অংশই তরুণ। এই ‘ইয়ুথ পাওয়ার’ আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যেই তরুণদের নিজেদের পাশাপাশি দেশকেও গড়ে তুলতে হবে।”

