পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ যেন ভুলেই গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে তাদের জন্য পাকিস্তান ছিল এক অজেয় প্রতিপক্ষ। দীর্ঘ ছয় বছরের অপেক্ষা শেষে অবশেষে সেই স্মৃতি ফিরল ক্যারিবীয়দের ঘরে। রোববার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুর্দান্ত লড়াইয়ে ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে তারা শুধু ম্যাচই জেতেনি, বরং সিরিজেও ফিরেছে ১-১ সমতায়।
ম্যাচে বৃষ্টিই যেন ছিল তৃতীয় প্রতিপক্ষ। একাধিকবার খেলা থামায় ব্যাটসম্যানদের ছন্দ বারবার ভেঙে যায়। ৩৭ ওভারের ম্যাচে পাকিস্তান থামে ৭ উইকেটে ১৭১ রানে। ওপেনাররা ভালো শুরু করলেও সেটিকে বড় করতে পারেননি—সাইম আইয়ুব করেন ২৩, আব্দুল্লাহ শফিক ফেরেন ২৬ রানে। আগের ম্যাচের নায়ক হাসান নওয়াজ এইবারও সেরা রান সংগ্রাহক, করেছেন ৩৬ রান। হুসেইন তালাতের ব্যাট থেকে আসে ৩১।
ডিএলএস পদ্ধতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৫ ওভারে ১৮১ রান। কিন্তু শুরুটা ছিল বিপর্যস্ত—দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। তখনই দৃশ্যপটে আসেন শেরফান রাদারফোর্ড। মাত্র ৩৩ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে তিনি ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন, পাল্টে দেন রানের গতি, আর পাকিস্তানি বোলারদের চেপে ধরেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে।
শেষের দৃশ্যপটে ছিলেন রস্টন চেজ ও জাস্টিন গ্রিভস। ৭৭ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে তারা দলকে নিরাপদে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। চেজ থাকেন ৪৯ রানে অপরাজিত, আর গ্রিভস করেন ২৬ রান। শেষ মুহূর্তে কভার দিয়ে দুর্দান্ত এক বাউন্ডারি মেরে চেজ নিশ্চিত করেন জয়, আর উচ্ছ্বাসে মুঠো পাঁকিয়ে উদযাপন করেন সেই মুহূর্ত।
এই জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শুধু সিরিজে ফিরিয়ে আনেনি, বরং ফিরিয়ে দিয়েছে হারানো আত্মবিশ্বাসও। ২০২৩ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হারানো দলটি এখন ২০২৭ আসরের প্রস্তুতিতে নতুন করে দল গড়ে তুলছে। এই ম্যাচে তারা দেখিয়েছে—ব্যাট হাতে উন্নতির পাশাপাশি চাপের মুহূর্তেও জয়ের রাস্তাটা খুঁজে বের করার সামর্থ্য তাদের আছে।
এখন চোখ মঙ্গলবারের দিকে, একই মাঠে সিরিজের তৃতীয় ও নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এবার সুযোগ—পাকিস্তানের বিপক্ষে বহু প্রতীক্ষিত সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ার।