কিছুদিন আগে ভারতীয় সংসদে নতুন ‘অনলাইন গেমিং বিল’ পাশ হয়। নতুন এই আইনের আওতায় এমন সব অ্যাপ, যেখানে টাকার বিনিময়ে খেলা হয়, তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে। কারণ, ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর ‘ড্রিম ১১’ ঠিক এই ধরনের একটি অ্যাপ। সূত্রের খবর, নতুন পরিস্থিতিতে ‘ড্রিম ১১’ আর ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর হিসেবে থাকতে আগ্রহী নয়। যার ফলে সম্ভাবনা রয়েছে যে, এশিয়া কাপে ভারতীয় দল স্পনসর ছাড়া খেলতে হবে।
‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “ড্রিম ১১-এর প্রতিনিধি সম্প্রতি বিসিসিআই-এর অফিসে এসেছিলেন। তারা বোর্ডের সিইও হেমঙ্গ আমিনের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন যে, তারা আর স্পনসর হিসেবে থাকতে পারবে না। ফলে এশিয়া কাপে ভারতের কোনো প্রধান স্পনসর থাকবে না। তবে বোর্ড খুব দ্রুত নতুন স্পনসরের জন্য দরপত্র আহ্বান করবে।”
আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মধ্যপথে চুক্তি ভাঙায় ‘ড্রিম ১১’-কে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। কারণ, বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিতে উল্লেখ ছিল—যদি সরকারের কোনো নতুন নীতির কারণে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তারা স্বেচ্ছায় চুক্তি থেকে সরে যেতে পারে। এ ধারা অনুসারে, বর্তমানে ‘ড্রিম ১১’ চুক্তি থেকে সরে যাচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ‘ড্রিম ১১’ ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর। বোর্ডের সঙ্গে তাদের চুক্তি ছিল তিন বছরের, যার অর্থ ২০২৬ সালের জুলাই পর্যন্ত। চুক্তির মোট মূল্য ছিল প্রায় ৩৫৮ কোটি টাকা। তবে এখন মাঝপথেই এই চুক্তি ভাঙার পথে। যদিও বিসিসিআই এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, ‘ড্রিম ১১’ও সরাসরি কিছু জানায়নি।
এদিকে, বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া এএফপি-কে জানিয়েছেন, “সরকার অনুমতি না দিলে আমরা কিছু করতে পারব না। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিমালা আমরা অক্ষরে অক্ষরে মানব।” তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি যে, এশিয়া কাপে প্রধান স্পনসর থাকছে কি না, বরং বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
পরিস্থিতি স্পষ্ট—‘ড্রিম ১১’ চুক্তি থেকে সরে যাচ্ছে, আর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে নতুন স্পনসর খুঁজে বের করতে হবে খুব কম সময়ের মধ্যে, যাতে এশিয়া কাপের আগে কোনো ঘাটতি না ঘটে।