এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তান—এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল দেখা ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক বিশেষ মুহূর্ত। ১৯৮৪ সালে প্রথম এশিয়া কাপের যাত্রা শুরু হলেও চার দশক পর এই দুই দল এবারই প্রথমবার একসঙ্গে উঠেছে টুর্নামেন্টের শিরোপা লড়াইয়ে।
টুর্নামেন্টের পথে তারা ইতোমধ্যে দু’বার মুখোমুখি হয়েছে, আর দু’বারই ভারত জিতেছে স্বচ্ছন্দে। তবুও খেলার উত্তাপ মাঠের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে অনেক দূরে। করমর্দন এড়িয়ে যাওয়া, ক্ষুব্ধ বাক্যযুদ্ধ আর প্ররোচনামূলক অঙ্গভঙ্গি—সবকিছুর পেছনে রয়েছে বছরের শুরুতে দুই দেশের সীমান্তে ঘটে যাওয়া সামরিক সংঘাতের প্রভাব। ভারত সরকার খেলোয়াড়দের পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে নিষেধ করেছিল, আর সেখান থেকেই যেন শুরু হয়েছে অস্বস্তিকর এক অধ্যায়। বিষয়টি এতটাই বেড়েছে যে একাধিকবার আইসিসি শুনানি হয়েছে, এমনকি দুই দলকেই আর্থিক জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে।
রবিবারের ফাইনাল তাই আর পাঁচটা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নয়। এখানে শুধু ব্যাট-বলের লড়াই নেই, বরং রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ছায়াও গাঢ়। ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো—গ্রুপ পর্বের দুই জয়ের পরও সব হারাতে হতে পারে যদি শেষ ম্যাচে তারা হোঁচট খায়। দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব যখন বললেন, এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ মনে হয় না ভারতের একতরফা সাফল্যের কারণে—তখনই বাড়তি চাপ তৈরি হয়ে গেছে তাদের ওপর।
অন্যদিকে পাকিস্তানের সামনে সুযোগ রয়েছে দাগ মোছার। গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তারা খুব বেশি সাফল্য পায়নি। ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রেকর্ডও নিরুৎসাহজনক—১৫ বারের মোকাবিলায় ১২ বার হার। এশিয়া কাপে তাদের অর্জনও সামান্য—মাত্র দুটি শিরোপা। বিপরীতে ভারত জিতেছে আটবার, শ্রীলঙ্কা ছয়বার।
তাই এই ফাইনাল পাকিস্তানের কাছে শুধু একটি ট্রফি নয়, বরং অতীতের ব্যর্থতা ঢাকার, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার এবং নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ। আর ভারতের জন্য এটি মর্যাদার প্রশ্ন—দুই দফা সহজ জয় দিয়ে শুরু করা যাত্রা কি তারা গৌরবে শেষ করতে পারবে, নাকি শেষ মুহূর্তে ব্যর্থতার তীরে এসে ভিড়বে?
রবিবারের ম্যাচ তাই শুধু ক্রিকেট নয়, আবেগ, রাজনীতি আর ইতিহাসের মিশেলে এক রুদ্ধশ্বাস লড়াই হয়ে উঠতে যাচ্ছে।