মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট যেন এখনও এক রহস্য। প্রথম ওয়ানডের পরও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না—এই পিচে আসলে কীভাবে ব্যাটিং করতে হবে। বাংলাদেশ হোক কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ—দুই দলই যেন সেই ধাঁধার সমাধান খুঁজছে। তাই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সোমবার লম্বা সময় ধরে উইকেটে কাটিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। লক্ষ্য একটাই—এক ম্যাচ হাতে রেখে আজই সিরিজ নিশ্চিত করা। অপরদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টিকে থাকার লড়াই। আজ দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচ, সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি।
প্রথম ওয়ানডের পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিং কতটা কঠিন। দুই দল মিলে ৮৮.৪ ওভারে তুলেছিল মাত্র ৩৪০ রান। তবে ক্যারিবীয়রা দাবি করছে, বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে তারা নাকি উইকেট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছে, সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাবে এবার।
বাংলাদেশের পরিকল্পনা স্পষ্ট—আবারও স্পিনের ওপর ভরসা রাখবে তারা। সেই কৌশলের ধারাবাহিকতায় দলে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে তিনি নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট, রাশিদ খানের পরই ছিলেন দ্বিতীয় সফলতম বোলার। নাসুমের সঙ্গে ঘূর্ণির লড়াইয়ে থাকবেন তানভীর ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেন। রিশাদ তো ইতিমধ্যেই প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারসেরা ছয় উইকেট নিয়ে নায়ক হয়ে গেছেন।
অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজও বসে নেই। তারাও স্পিন বিভাগে জোর দিয়েছে। দলে এনেছে বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার আকিল হোসেনকে, সঙ্গে বামহাতি পেসার র্যামন সাইমন্ডসকেও।
তবে ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তা এখনও কাটেনি। প্রথম ম্যাচে দল তুলেছিল মাত্র ২০৭ রান—যেখানে অর্ধশতক পেয়েছেন কেবল তাওহীদ হৃদয়। নতুন মুখ মাহিদুল ইসলাম ৪৬ রানের ইনিংস খেলে নজর কাড়লেও সামগ্রিকভাবে ব্যাটিং ছিল মন্থর, ডট বলের আধিক্য আর বাউন্ডারির ঘাটতি চোখে পড়ার মতো।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংও সমান দুর্বল। ১৩৩ রানে অলআউট হওয়ার পর এবার তারা চাইবে অন্তত লড়াইটা জমিয়ে দিতে। ব্র্যান্ডন কিং ও আলিক আথানেজ আগের ম্যাচে আক্রমণাত্মক শুরু করেছিলেন, কিন্তু রিশাদের স্পিনে দুজনই পরাস্ত হন। এরপর আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি—না অধিনায়ক শাই হোপ, না রোস্টন চেজ।
ফলে আজও তাদের ভরসা মূলত বোলাররাই। প্রথম ম্যাচে জেইডেন সিলস নিয়েছিলেন তিন উইকেট, আর খ্যারি পিয়েরে পাঁচ বছর পর দলে ফিরে ভালো বল করেও উইকেট পেয়েছিলেন মাত্র একটি। মিরপুরের ধীর উইকেটে এবার দায়িত্বটা নিতে হবে রোস্টন চেজ ও গুডাকেশ মোটির ঘূর্ণিতেই।
ইতিহাস বলছে, মুখোমুখি লড়াইয়ে এখনো সামান্য এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই দল এতদিনে মুখোমুখি হয়েছে ৪৮ বার—ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ২৪টি, বাংলাদেশ ২২টি। বাকি দুটি ম্যাচ ছিল পরিত্যক্ত। অর্থাৎ ব্যবধান এখন মাত্র দুই ম্যাচের। সাম্প্রতিক ফর্ম ও ঘরের মাঠের সুবিধা মিলিয়ে আজ বাংলাদেশের সামনে সুযোগ সেই ব্যবধান মুছে ফেলার—আর একসঙ্গে সিরিজও নিশ্চিত করার।

