মিরপুরের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট এবারের সিরিজ শুরুর আগ থেকেই সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। উইন্ডিজ দলের কোচ ড্যারেন স্যামি জানিয়েছেন, এ ধরনের উইকেট তিনি আগে কখনো দেখেননি। ধারাভাষ্যকার ফারভিজ মাহরুফও একই অনুভূতি জানিয়েছেন। এমনকি উইন্ডিজ স্পিনার আকিল হোসেইন বলেছিলেন, টিভিতে উইকেট দেখে মনে হচ্ছিল, তার টিভিটাই হয়তো নষ্ট!
এখন আলোচনার মূল কারণ হলো উইকেটের ধরন। এই মাটিতে গতি খুব কম থাকে, বোলিং আচরণ বেশ মন্থর। স্পিনাররা অবশ্য সুবিধা পান, কিন্তু ব্যাটারদের জন্য রান করা বেশ সহজ। ফলে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান সাধারণত ২২০–২৩০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
এদিকে, মিরপুরে পেসারদের গতির ঝড় তুলার ইতিহাসও আছে। আগে ‘কাট ঘাস’ ব্যবহার করে উইকেটে গতি আনা হতো। তবে এবার বিসিবি এই পদ্ধতি ব্যবহার করেনি, ফলে উইকেট তুলনামূলকভাবে কালো এবং ধীরগতির হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন,
“প্রথম দুই ম্যাচে উইকেট দেখেছিলাম, ধীরগতির ছিল। মাটিটা স্বাভাবিকভাবেই একটু স্লো। আগের সময় মরা ঘাস ব্যবহার করে সচল করা হতো, এবার সেই পরীক্ষা হয়নি। এজন্য উইকেটের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল।”
বুলবুল আরও জানিয়েছেন, শিগগিরই উইকেট বদলানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে এটি ধাপে ধাপে এবং সতর্কভাবে করা হবে। তিনি বলেন,
“আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে ধীরে ধীরে দুইটি করে নতুন উইকেট দিয়ে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছি।”
বিসিবি শুধু মিরপুর নয়, দেশের সব ভেন্যুইকেও নজর রাখছে। বুলবুল জানান,
“দেশের সব ভেন্যু—বর্তমান ও ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয়—নিয়ে আমরা দীর্ঘমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি ভেন্যুকে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ রাখা। এটা একটি অত্যন্ত টেকনিক্যাল বিষয়, তাই ধীরে ধীরে এগোচ্ছি।”
মিরপুরের এই ধীরগতির উইকেট শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের নয়, দর্শকদের জন্যও নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিসিবির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে দেশের ভেন্যুগুলো আরও টেস্ট-ফ্রেন্ডলি এবং প্রতিযোগিতামূলক হবে।

