চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের পানির নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতা দেখা দিয়েছে। কারাগারে বর্তমানে কমপক্ষে ছয় হাজার বন্দি রয়েছেন। তাদের জন্য ১১টি সাবমার্সিবল পাম্পের পানি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের সহযোগিতায় সম্প্রতি নেওয়া পরীক্ষায় কয়েকটি পাম্পের পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সহ নানা জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, পদ্মা ওয়ার্ড, যমুনা ওয়ার্ড এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনের তিনটি পাম্পের পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। দুটি পাম্পে ‘হার্ডনেস’ বা খরতার সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের পাম্পের পানি কারাগারের আবাসিক এলাকাতেও ব্যবহার হয়।
একজন কারা কর্মকর্তা বলেন, সাবমার্সিবল পাম্পের পাইপ মাটির নিচে থাকে। লিকেজ বা স্যুয়ারেজ লাইনের সংযোগের কারণে পানিতে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে। কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া মূলত মানুষের অন্ত্রে থাকে। তবে পানিতে এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকলে বুঝতে হবে সেখানে প্রাণিজ বর্জ্য মিশেছে। এই পানি পেলে জন্ডিস, হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া, কলেরা ও টাইফয়েডের মতো রোগের ঝুঁকি থাকে।
কারাগারে থাকা বন্দিদের সঙ্গে যোগাযোগে জানা গেছে, কারাগারের ভেতরের পরিবেশ যথেষ্ট অস্বচ্ছন্দ ও অপরিষ্কার। বন্দিরা প্রতিদিন নতুন-নতুন প্রবেশ করছে। মিনারেল ওয়াটার বা ফোটানো পানির ব্যবস্থা নেই। ফলে পাম্পের পানি পান ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, ১১টি পাম্পের মধ্যে ১০টির পানি পরীক্ষা করা হয়েছে। জীবাণু পাওয়া পাম্পের পানি কারাবন্দিদের খেতে দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। ওয়াসার পাম্পগুলো নিরাপদ আছে। তবে স্যুয়ারেজ লাইনের সংযোগ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, জীবাণু পাওয়া পাম্পের পানি দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে জন্ডিস, হেপাটাইটিস ও ডায়রিয়ার ঝুঁকি থাকে। কারা কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে পানির লাইন ও স্যুয়ারেজ লাইনের মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কারাগারে একজন স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বন্দিদের খাবার ও পানিসহ স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন বিষয় পর্যবেক্ষণ করবেন।

