বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা রোধে শাস্তির বিধানসহ নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিএমইউ হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) অনুমোদিত নয় এমন ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন ও উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিটি মত দিয়েছে, কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্ট প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না, তা নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় আইনি প্রতিকার ও শাস্তির বিধানসহ একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। এই নীতিমালা প্রণয়নে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০’-কে প্রামাণ্য হিসেবে বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টের অনুমোদন ও মান যাচাইয়ে ডিজিডিএ ও বিএসটিআই কতটা কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখছে, তা নিশ্চিত করার পরামর্শও দিয়েছে কমিটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজলভ্য হলেও চিকিৎসকদের অনেকেই এ বিষয়ে সচেতন নন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগকে উদ্যোগ নিয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজনেরও সুপারিশ করেছে কমিটি।

