জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরণের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের নেতৃত্বাধীন তিন দলীয় জোট বুধবার ভেঙে যায়, যার ফলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিরোধী রক্ষণশীল দল শলৎজকে দ্রুত আস্থা ভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে এবং চাইছে জানুয়ারিতেই নতুন নির্বাচন হোক।
জোটের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা মতভেদের মূল কারণ ছিল বাজেটের ঘাটতি পূরণের উপায় এবং দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করার পরিকল্পনা নিয়ে দ্বন্দ্ব। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি বর্তমানে প্রবৃদ্ধির সংকটে রয়েছে, যা নিয়ে দেশটির জনগণ বেশ চিন্তিত।
জোট ভাঙার ঠিক একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক এবং ন্যাটো জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইউরোপের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
চ্যান্সেলর শলৎজ মধ্য-বামপন্থী সামাজিক গণতন্ত্রী দলের (এসপিডি) নেতা, তার অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। কারণ, ওই অর্থমন্ত্রী শলৎজের বাজেট পরিকল্পনার বিরোধিতা করছিলেন। এর পরেই ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি) সরকার থেকে বেরিয়ে আসে। ফলে এখন শলৎজের সরকারে শুধুমাত্র তার দল এসপিডি এবং গ্রিন পার্টি রয়েছে কিন্তু সংসদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।
চ্যান্সেলর শলৎজ ঘোষণা করেছেন যে, জানুয়ারিতে তিনি আস্থা ভোটের আয়োজন করবেন। যদি তিনি এতে পরাজিত হন, তবে মার্চের শেষ নাগাদ নতুন নির্বাচন হবে। কিন্তু বিরোধী নেতা ফ্রিডরিখ মের্জ বলছেন, এত অপেক্ষা করা যাবে না; তিনি চান আস্থা ভোটটি দ্রুত ও আগামী সপ্তাহের মধ্যে হোক।
এই রাজনৈতিক অস্থিরতা এমন এক সময় এসেছে যখন জার্মানির অর্থনীতি স্থবির অবস্থায় রয়েছে, অবকাঠামো দুর্বল এবং সামরিক বাহিনী প্রস্তুত নয়। তবে কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এই সংকট হয়তো ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করতে পারে। আইএনজি ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ কারস্টেন ব্রেজেস্কি বলেন, “নতুন নির্বাচন এবং শক্তিশালী সরকার দেশের জন্য নতুন দিক নির্দেশনা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে পারে।”
সরকার ইতোমধ্যে জোয়ার্গ কুকিজকে নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি শলৎজের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে পরিচিত।
জার্মানির রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে আগামী আস্থা ভোট এবং সম্ভাব্য নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : রয়েটার্স