গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতের একাধিক হামলায় অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই হামলাগুলোর মধ্যে একটি ঘটেছে খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি অঞ্চলের একটি ক্যাফেতে, যেখানে ইসরাইলি ড্রোনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ। বিশেষত, এই অঞ্চলটি ইসরাইলি সামরিক বাহিনী পূর্বেই নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা করেছিল, যা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।
খান ইউনিসের ওই ক্যাফেতে, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা ও বড় পর্দায় ফুটবল খেলার প্রদর্শনী চলছিল, সেখানে সাধারণ মানুষ যুদ্ধের আতঙ্ক থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে জড়ো হয়েছিলেন। আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই সময় ইসরাইলি বাহিনীর একটি ড্রোন থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এতে ঘটনাস্থলে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হন এবং অনেকেই গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে নাসের হাসপাতালে নেয়া হলে তাদের মুখাবয়ব বিকৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নাসের হাসপাতালে নিয়ে আসা সাতজন আহত ব্যক্তির মধ্যে অস্ত্রোপচারও করা হয়েছে।
গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চল দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, এই হামলাটি ইসরাইলের কথিত নিরাপদ অঞ্চল এবং অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর অঞ্চল সম্পর্কিত মিথ্যা প্রতিশ্রুতির আরেকটি উদাহরণ। তিনি বলেন, ক্যাফেতে লোকজন শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার বা ফুটবল খেলা দেখার জন্য আসতেন। সেখানে কোনো ধরনের সংঘাতের উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু তারপরও ইসরাইলি বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এর আগে গাজার আল আওদা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবারের সিরিজ আক্রমণের ফলে আরও ২০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি ট্যাংক পশ্চিম দিক থেকে নুসেরাত শরণার্থী শিবিরের দিকে অগ্রসর হয়ে নিরীহ বাসিন্দাদের ও নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করা মানুষদের ওপর গুলি চালায়। উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া শহরেও ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে আলাদা আরেকটি বিমান হামলায় আরও কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটে। এর পাশাপাশি একটি ইসরাইলি ড্রোন কামাল আদওয়ান হাসপাতালে আক্রমণ চালায়, যেখানে তিনজন মেডিকেল কর্মী আহত হন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলমান সংঘাতের মধ্যে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৪৩ হাহার ৬০৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।