গাজা সিটি দখলের মিশনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রতিদিনই চলছে ভয়াবহ তাণ্ডব। একদিনের ব্যবধানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আরও একটি বহুতল ভবন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) গাজাজুড়ে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৭ ফিলিস্তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজা সিটিতে টিকে থাকা অল্প কয়েকটি স্থাপনাই এখন প্রধান লক্ষ্যবস্তু। একের পর এক বোমাবর্ষণে সেগুলো ধ্বংস করছে ইসরাইলি বাহিনী।
সেদিন হামাসের ঘাঁটি দাবি তুলে ১৫তলা সুসি টাওয়ার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয় ইসরাইল। টাওয়ারটির ঠিক বিপরীতেই ছিল জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) এর কার্যালয়।
এদিকে, গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরতে বলা হলেও যথেষ্ট সময় না দিয়েই বোমা ফেলা হচ্ছে। বিমান হামলার পাশাপাশি চলছে স্থল অভিযানও। দেইর আল বালাহ, খান ইউনিসসহ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চলে সমানতালে আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৪৩৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ৬২ হাজার ৩৬৭ জন। হাজারো মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার এক্স–এ একটি ভিডিও পোস্ট করেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ। সেখানে গাজা সিটির একটি উঁচু ভবন ধসে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন—“আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।”
ইসরাইল দাবি করেছে, ধ্বংস করা ভবনটি হামাস নজরদারির কাজে ব্যবহার করত। তবে কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। হামাসও ওই দাবি অস্বীকার করেছে।
গাজার ওপর লাগাতার এই হামলা ও সহায়তা প্রত্যাশীদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এটিকে মানবিক বিপর্যয় আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে ইসরাইল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—গাজা সিটিতে অভিযান চলবে, থামবে না।

