যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের ডেমোক্র্যাটিক দলীয় মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি বলেছেন, তিনি যদি মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলে তাকে গ্রেপ্তার করতে নিউইয়র্ক পুলিশকে (এনওয়াইপিডি) নির্দেশ দেবেন। নেতানিয়াহুকে যুদ্ধাপরাধী মনে করেন জোহরান এবং গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
সেই অনুযায়ী, তিনি আশা করেন, নিউইয়র্কে বিমানবন্দরেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করবে। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের গ্রেপ্তার বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব এবং ফেডারেল আইন লঙ্ঘন হতে পারে।
জোহরান তার নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, “আমার লক্ষ্য শহরকে এমন জায়গা হিসেবে গড়ে তোলা যেখানে আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করা হবে।” তিনি উল্লেখ করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করবেন।
সাক্ষাৎকারে জোহরান উদাহরণ হিসেবে ২০০৪ সালের সান ফ্রান্সিসকো মেয়রের পদে কেভিন নিউসমের সিদ্ধান্তের উল্লেখ করেছেন। তখন নিউসম সমকামী দম্পতিদের বিয়ের লাইসেন্স ইস্যু করে ফেডারেল আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন।
জোহরান বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে থাকা সম্ভব নয়, তাই শহর ও রাজ্যগুলোকে আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করাচ্ছেন, আইসিসি থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে না। এছাড়া নিউইয়র্কে নেতানিয়াহু গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে জোহরানকে ফেডারেল সরকারের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়াতে হতে পারে।
জোহরানের এই অবস্থান গাজার বর্তমান যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আরও প্রভাবশালী হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিউইয়র্কে বসবাসরত ফিলিস্তিনি ও ডেমোক্র্যাট ভোটাররা তার অবস্থানকে সমর্থন করছেন।
নেতানিয়াহু এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন নন। তিনি বলেন, জোহরানের হুমকি ‘কিছু দিক থেকে হাস্যকর’। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জোহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, “ভালো আচরণ করুন, নইলে বড় সমস্যায় পড়বেন।”