রাশিয়ার ‘ভুলবশত’ ড্রোন হামলার পর পোল্যান্ডে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য স্বেচ্ছাসেবী যোগদান উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত বুধবার পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার পর দেশটির নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও তীব্র হয়েছে। যদিও রাশিয়া দাবি করেছে, তাদের ড্রোন হামলার লক্ষ্য ইউক্রেন ছিল, পোল্যান্ড নয়।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এই ঘটনার বিরুদ্ধে বলেছেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং রাশিয়ার পরিকল্পিত আক্রমণ। সীমান্ত থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে, উত্তর পোল্যান্ডের নাগরিক অ্যাগনিয়েস্কা জেড্রুশাক তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমার সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে আমি সবকিছু করব, তাকে রক্ষা করতে আমি লড়তে চাই।”
ব্রানিয়েভোর প্রশিক্ষণ মাঠে, দক্ষিণ কোরিয়ার কে-২ ট্যাংক ব্যবহার করে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী তাদের সামরিক দক্ষতা বাড়াচ্ছেন। ২০২২ সালে পোল্যান্ড ১৮০টি কে-২ ট্যাংক অর্ডার করেছিল।
সেন্ট্রাল মিলিটারি রিক্রুটমেন্ট সেন্টারের প্রধান কর্নেল গ্রেগর্জ ভাভরজিনকিউইচ জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে ২০ হাজারের বেশি নাগরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। এই বছর মোট ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবীরা অবশ্যই সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতায় থাকেন না। তবে তারা পেশাদার সামরিক চাকরি, টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সে (ডব্লিউওটি) যোগ দিতে পারেন, অথবা সক্রিয় বা প্যাসিভ রিজার্ভ হিসেবে থাকেন।
পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা ব্যয় ২০২২ সালের ২.২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৫ সালে ৪.৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ন্যাটোর মধ্যে সর্বোচ্চ। ন্যাটোর হিসাব অনুযায়ী, ২ লাখ ১৬ হাজার সদস্য নিয়ে পোল্যান্ড তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক শক্তি, যদিও এটি রাশিয়ার ১৫ লাখ সক্রিয় সেনার তুলনায় কম।
আগামী দশ বছরে পোল্যান্ডের লক্ষ্য তাদের সামরিক শক্তি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাড়ানো এবং ২০২৭ সালের মধ্যে মোট ১ লাখ স্বেচ্ছাসেবীকে সামরিক ও বেসামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া।