যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফের যুক্তরাষ্ট্রের দখলে আসা উচিত। লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই ঘাঁটির অবস্থান কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ভাষায়, “এটি চীনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির স্থানের কাছ থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে।”
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, লন্ডন সফররত ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন। আফগানিস্তানের বিস্তৃত এই ঘাঁটিটি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর টানা দুই দশক মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।
ট্রাম্প এর আগে পানামা খাল থেকে শুরু করে গ্রিনল্যান্ড পর্যন্ত নানা ভূখণ্ড অধিগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বাগরাম ঘাঁটির প্রতিও তিনি দীর্ঘদিন আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন। তাঁর ইঙ্গিত, কোনোভাবে তালেবানের সম্মতিতেই যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আবার ঘাঁটিটি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে। তবে সমঝোতার ধরন কেমন হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ হলে তা হবে বড় ধরনের নীতি পরিবর্তন। কারণ তালেবানই একসময় যুক্তরাষ্ট্রকে দেশ থেকে সরিয়ে মার্কিনপন্থী সরকার উৎখাত করেছিল।
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করছেন, ঘাঁটি পুনর্দখল করতে গেলে বিশাল সামরিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। তাঁদের মতে, অন্তত ১০ হাজার সেনা ও উন্নত বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছাড়া এটি সম্ভব নয়। এক কর্মকর্তা বলেন, “বাস্তবে এটা কীভাবে সম্ভব হবে, আমি কোনো উপায় দেখছি না।”
নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জও কম নয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়েদাসহ জঙ্গি হুমকি মোকাবিলা করতে হবে। পাশাপাশি ইরানের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রের ঝুঁকিও বড় বাধা। এক সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, “ওখানে থাকার সামরিক সুবিধা খুব একটা নেই। বরং ঝুঁকিই বেশি।”
ট্রাম্প এর আগেও অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘাঁটি ছেড়ে দিয়েছেন। যদিও ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনের করা তালেবান চুক্তিতেই সব আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ ছিল।
অন্যদিকে আফগানিস্তান নিয়ে কূটনৈতিক আলাপও চলছে। কাবুলে আটক মার্কিন নাগরিকদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক বিশেষ জিম্মি দূত অ্যাডাম বোয়লার ও সাবেক কূটনীতিক জালমে খলিলজাদ। বৈঠকে ছিলেন তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিও।

