বিশ্ব অর্থনীতি এখন মন্থর গতিতে চলছে। একই সঙ্গে ঋণের পরিমাণ ক্রমবর্ধমান, যা অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কিছু সরকার ভাবতে পারে যে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি সীমিত করা প্রয়োজন। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে একেবারেই ভুল।
দারিদ্র্য মোকাবেলা শুধুমাত্র নৈতিক দায়িত্ব নয়। এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক সংহতি ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্যও অপরিহার্য। দারিদ্র্য থাকলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও জীবনমানের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। ফলে মানুষ কাজের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে না, উৎপাদনশীলতা কমে যায় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সীমিত হয়। আবার, সমাজে বৈষম্য বেড়ে গেলে সংঘাত ও অপরাধের ঝুঁকিও বাড়ে। তাই দারিদ্র্য হ্রাস করা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি কার্যকর বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
সাম্প্রতিক গবেষণা এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। দেখা গেছে, দারিদ্র্যের হার যদি ১০ শতাংশ কমানো যায়, তাহলে সেই দেশের বার্ষিক মাথাপিছু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ১.২ শতাংশ বাড়তে পারে। অর্থাৎ দারিদ্র্য হ্রাস কেবল সামাজিক উন্নয়ন নয় বরং সরাসরি অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত।
কিছু দেশের উদাহরণ বিশেষভাবে চোখে পড়ে। কঙ্গো বা প্যারাগুয়ের মতো দেশগুলোয় যদি দারিদ্র্য কমানো যায়, তাহলে তাদের বার্ষিক মাথাপিছু প্রবৃদ্ধিতে ২৫ শতাংশ বা তারও বেশি বৃদ্ধি হতে পারে। এটি দেখায় যে, দারিদ্র্য হ্রাসের প্রভাব অনেক বেশি হতে পারে, বিশেষ করে যেখানে সম্পদের বণ্টন অস্বাস্থ্যকর এবং সামাজিক নিরাপত্তা তেমন নেই।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দারিদ্র্য মোকাবেলাকে অর্থনৈতিক নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা মানে হলো দেশের জন্য স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের বিনিয়োগ করা। ঋণের চাপ থাকলেও, এই ধরনের সামাজিক বিনিয়োগ কমানো মোটেও সমাধান নয়। বরং দারিদ্র্য হ্রাসের মাধ্যমে দেশগুলো দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এখন দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিকে কেটে না বরং তা শক্তিশালী করতে হবে। এটি তাদের জন্য শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কৌশল।
আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের অভিজ্ঞতা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও দারিদ্র্য হ্রাস সম্ভব। সাফল্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন মূলত তিনটি ক্ষেত্রে ধারাবাহিক মনোযোগ এবং কার্যকর নীতি। এগুলো হলো – সাশ্রয়ী জ্বালানি, মানবসম্পদে বিনিয়োগ এবং বড় অবকাঠামো উন্নয়ন।
১. সাশ্রয়ী জ্বালানি:
বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও সরবরাহ বৃদ্ধি দারিদ্র্য হ্রাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প ও কৃষি খাতের কার্যক্রম নির্ভর করে বিদ্যুতের প্রাপ্যতা ও খরচের উপর। যথাযথ বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলে নতুন শিল্প স্থাপন সম্ভব হয়, কৃষি উৎপাদন বাড়ে এবং জনগণের আয় ও জীবনমান উন্নত হয়।
একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হলো বিশ্বব্যাংক এবং আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এএফডিবি) যৌথ প্রকল্প ‘মিশন ৩০০’। এর লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন আফ্রিকানকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। এটি কেবল বিদ্যুৎ সংযোগ বৃদ্ধি করবে না বরং শিল্প ও কৃষি খাতে নতুন বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি দারিদ্র্য হ্রাসে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি বড় চালিকা শক্তি হতে পারে।
২. মানবসম্পদে বিনিয়োগ:
মানবসম্পদে বিনিয়োগ করা দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে বেশি প্রতিদান দেয়। গবেষণা দেখিয়েছে যে শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং পুষ্টি কর্মসূচি ভবিষ্যতের আয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালে জ্যামাইকায় শৈশবকালীন বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে মধ্যজীবনের আয় ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, ছোট বয়সে সঠিক শিক্ষাগত ও পুষ্টিকর সমর্থন দারিদ্র্য হ্রাসে কতটা কার্যকর হতে পারে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ২০২৪ সালের একটি গবেষণা দেখিয়েছে, স্কুল পুষ্টি কর্মসূচিতে প্রতি ১ ডলারের বিনিয়োগ অন্য খাতে ৯ ডলার পর্যন্ত সুবিধা এনে দিতে পারে। এটি প্রমাণ করে যে, শিশুদের পুষ্টি এবং শিক্ষা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য বা জ্ঞান বৃদ্ধিই নয় বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও সরাসরি অবদান রাখে।
কেনিয়ার উদাহরণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দেশটির ‘হোম-গ্রোন স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম’ শিক্ষা, পুষ্টি এবং স্থানীয় কৃষিকে সংযুক্ত করেছে। এর ফলে স্কুলে উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে, শিশুদের স্বাস্থ্য উন্নত হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি আয়ের সম্ভাবনাও বেড়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, শিশুদের পুষ্টি এবং শিক্ষা উন্নয়নে বিনিয়োগ শুধু ব্যক্তিগত উন্নয়ন নয়, সমাজ ও অর্থনীতির জন্যও দীর্ঘমেয়াদি ফল বয়ে আনে।
৩. বড় অবকাঠামো উন্নয়ন:
বৃহৎ আন্তঃসীমান্ত অবকাঠামো দেশের অর্থনৈতিক একীকরণ ত্বরান্বিত করে। এটি ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে এবং দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়ক হয়।
পশ্চিম আফ্রিকার পাঁচটি দেশকে সংযুক্তকারী ১৫.৬ বিলিয়ন ডলারের ‘আবিদজান-লাগোস সুপার-করিডোর’ ২০৩০ সালের মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার মোট বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ পরিচালনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি দেশগুলোর মধ্যে পণ্য ও পরিষেবার আদান-প্রদান সহজ করবে, স্থানীয় ব্যবসার প্রসার ঘটাবে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া, এএফডিবির অর্থায়নে নির্মিত ৫৭৬ মিলিয়ন ডলারের ‘নাকালা রোড করিডোর’ ইতিমধ্যেই জাম্বিয়া, মালাউই ও মোজাম্বিকের ২০ লক্ষাধিক মানুষের জন্য কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধু যাতায়াত ও বাণিজ্য সহজ করেনি বরং স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বাজারের প্রাপ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আফ্রিকার অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে, দারিদ্র্য হ্রাসে বাজেট সীমাবদ্ধতা কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। সঠিক নীতি ও বিনিয়োগ থাকলে ছোটো দেশও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পারে। জ্বালানি, মানবসম্পদ এবং বড় অবকাঠামোতে বিনিয়োগ মিলিয়ে একটি সমন্বিত নীতি গ্রহণ করা হলে, দারিদ্র্য হ্রাসের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব।
বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশ এখন অর্থনৈতিক চাপে রয়েছে। বাজেট সংকট ও সরকারি খরচ সীমিত থাকায় তারা বড় বিনিয়োগ চালাতে পারছে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নতুন অর্থায়নের কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও কিছু কৌশল তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী, তবে এগুলো বড় পরিসরে কার্যকর করতে হলে বর্ধিত অর্থায়নের প্রয়োজন।
একটি সম্ভাব্য সমাধান হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘বিশেষ উত্তোলন অধিকার’ বা এসডিআর। এটি এমন একটি বৈশ্বিক তহবিল যেটি দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এএসডিআরের ব্যবহার উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এএফডিবি) এবং ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) ইতোমধ্যেই এসডিআরের ওপর ভিত্তি করে একটি হাইব্রিড ক্যাপিটাল ইন্সট্রুমেন্ট তৈরি করেছে। ২০২৪ সালে আইএমএফ দেশগুলোকে স্বেচ্ছায় তাদের বিদ্যমান এসডিআর উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এএফডিবি ও আইডিবির মাধ্যমে পুনর্বণ্টনের অনুমতি দিয়েছে।
এই ব্যাংকগুলোর ট্রিপল-এ ক্রেডিট রেটিং এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে। তাই তারা অতিরিক্ত সম্পদকে সবচেয়ে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম। হিসাব অনুযায়ী, এএফডিবি ও আইডিবিতে প্রাপ্ত এসডিআরের প্রতিটি ডলার ৩ থেকে ৮ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এসডিআরের এই অর্থ ব্যবহার করে নিম্ন সুদের ঋণ, গ্যারান্টি এবং মিশ্র অর্থায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা যায়। এর ফলে অবকাঠামো, গ্রিনটেক, কৃষি এবং অন্যান্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আরও আকর্ষণীয় হবে।
লাতিন আমেরিকায় আইডিবি অনুমান করছে, ১ বিলিয়ন ডলারের এসডিআর ব্যবহার করে ৭-৮ বিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন তহবিল তৈরি করা সম্ভব। এই তহবিল নিম্নলিখিত কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে:
- ১০ মিলিয়ন শিশুর জন্য স্কুলে খাবারের ব্যবস্থা
- ১.৩ মিলিয়ন নারী ও শিশুর জন্য স্বাস্থ্যসেবা
- এক বছরের জন্য ৪ মিলিয়ন পরিবারের সরাসরি নগদ সহায়তা
এতে ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হবে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র সীমিত অর্থায়ন ব্যবহার করেও বিশাল মানবিক ও সামাজিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
আফ্রিকায় অল্প পরিমাণ এসডিআরও বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে। কল্পনা করুন, মাত্র ১.৫ বিলিয়ন ডলার এসডিআর এএফডিবিতে হস্তান্তর করলে ১০ বিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন অর্থায়ন তৈরি করা সম্ভব।
এই অর্থ কৃষি খাতে ব্যবহার করা হলে:
- ১৬ মিলিয়ন কৃষকের উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ হবে
- খাদ্য উৎপাদন ৪০ মিলিয়ন টন বৃদ্ধি পাবে
- ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাবে
এছাড়াও, অতিরিক্ত ৪.৫ বিলিয়ন ডলার আঞ্চলিক অবকাঠামোর জন্য ব্যবহার করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, ‘লোবিটো করিডোর’ প্রকল্প। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমর্থিত এই প্রকল্প:
- অ্যাঙ্গোলাকে জাম্বিয়া ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে
- আটলান্টিক থেকে এশিয়ার শিপিং সময় কমবে অন্তত ১০ দিন
- কপার ও কোবাল্ট রফতানি থেকে বিলিয়ন ডলারের আয় বৃদ্ধি পাবে
রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
যদি যথেষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা থাকে, এসডিআর বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর জন্য শক্তিশালী অর্থায়নের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। এএফডিবি ও আইডিবির উদ্ভাবনী মডেলের মাধ্যমে দেশগুলো তাদের এসডিআরের একটি অংশ ঋণ হিসেবে ব্যবহার করে যুগান্তকারী বিনিয়োগে সহায়তা করতে পারে।
একই সঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক রিজার্ভের মূল্য সংরক্ষণ করতে পারবে এবং অংশগ্রহণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য উচ্চতর প্রতিদান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
দারিদ্র্য দূরীকরণকে বৈশ্বিক অগ্রাধিকার হিসেবে রাখা উচিত। সুপরিকল্পিত বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনী অর্থায়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলো:
- অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারে
- জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে
- সকলের জন্য স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়তে পারে
এসডিআরের কার্যকর ব্যবহার শুধু অর্থায়নের সমস্যা সমাধান করবে না, বরং মানবিক ও সামাজিক উন্নয়নেও বিপুল অবদান রাখতে সক্ষম। এটি একটি বাস্তব ও কার্যকর কৌশল, যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারে।

