মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি গাজা সংকট, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং বৈশ্বিক শান্তি প্রচেষ্টায় তার দেশের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেছেন। এছাড়াও সম্প্রতি দোহায় কেন্দ্রস্থলে একটি আবাসিক ভবনে ইসরাইলের “বিশ্বাসঘাতক” হামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি। ভাষণে তিনি চারটি মূল বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গাজায় ইসরাইলি হামলার তীব্র সমালোচনা-
কাতারের আমির গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ইসরাইল যুদ্ধকে ব্যবহার করে গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। এ সময় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হচ্ছে এবং বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। তার মতে, এই হামলার প্রভাব কেবল গাজাতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং পশ্চিম তীর ও আল-আকসা মসজিদ পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা-
শেখ তামিম বলেন, কাতার মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরাইলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এসব প্রচেষ্টাকে দুর্বল করছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যুদ্ধবিরতির অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানান।
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান-
কাতারের আমির ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে জোরালো অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর প্রশংসা করেন এবং অন্য দেশগুলোকে আহ্বান জানান, নীরবতা শুধুমাত্র গণহত্যা এবং দখলদারিত্ব অব্যাহত রাখতে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক শান্তি ও সংলাপে কাতারের ভূমিকা-
শেখ তামিম বিশ্বমঞ্চে কাতারকে একটি বিশ্বস্ত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি ইউক্রেন, আফ্রিকা, সিরিয়া, লেবানন ও সুদানে শান্তি প্রচেষ্টায় কাতারের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা জানান। একইসঙ্গে তিনি আগামী বছরের সামাজিক উন্নয়ন শীর্ষ সম্মেলন এবং ২০৩৬ সালের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের প্রতি কাতারের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কাতারের এই ভাষণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেশটির কূটনৈতিক প্রভাব ও মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার গুরুত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। বিশেষত গাজা সংকট ও ফিলিস্তিনি স্বায়ত্তশাসনের ক্ষেত্রে কাতারের সক্রিয় অবস্থান আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।