পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহবাজ শারিফ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাতকালে দেশটিতে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগে আমন্ত্রণ জানান। একই আলোচনায় গাজা যুদ্ধ শেষ করতে চলমান উদ্যোগগুলোর ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
শারিফ এই সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে সঙ্গে নিয়ে ছিলেন। কর্মকর্তারা বলছেন, এটি ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কের আরও গরম হওয়ার ইঙ্গিত, যা আগের আমেরিকান প্রশাসনের সময়ের দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, শারিফ কৃষি, প্রযুক্তি, খনন ও শক্তি খাতকে আমেরিকান বিনিয়োগের অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর আগে ট্রাম্প পাকিস্তানে তেলের সুযোগগুলো অনুসন্ধান করতে আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রী আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় হবে এবং উভয় দেশের জন্য তা লাভজনক হবে।”
হোয়াইট হাউস থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সাক্ষাৎকারের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প- শারিফ ও মুনিরকে প্রশংসা করে “খুব মহান মানুষ” হিসেবে উল্লেখ করেন।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনী এখনও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে এবং সেনাপ্রধানকে সাধারণভাবে দেশটির সর্বাধিক ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিয়ে আলোচনায় ফোকাস-
আলোচনার আরেকটি কেন্দ্রবিন্দু ছিল মধ্যপ্রাচ্য, যেখানে পাকিস্তান ক্রমবর্ধমানভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। শারিফ ট্রাম্পের গাজা সংঘাতের অবিলম্বে সমাধান নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছেন।
এই সপ্তাহের শুরুতে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পাশে নিউইয়র্কে অন্যান্য মুসলিম অধ্যুষিত দেশের নেতাদের সঙ্গে শারিফ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ট্রাম্প গাজা ও বৃহত্তর অঞ্চলের জন্য ২১-পদক্ষেপের শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আশা প্রকাশ করেছেন যে “কিছু না কিছু অগ্রগতি হবে।”
সাক্ষাৎকারের সময় পাকিস্তান সম্প্রতি সৌদি আরবের সঙ্গে যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে আলোচিত হয়েছে।
এটি ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানি একজন নাগরিক নেতার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ, যা ২০১৯ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সময় হয়েছিল। এর আগে ট্রাম্প এ বছর মুনিরের সঙ্গে একাই সাক্ষাৎ করেছিলেন, যা নাগরিক সরকারের কার্যকালে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের সঙ্গে প্রথম এমন সাক্ষাৎ ছিল।