ভারতের পূর্ব হিল অঞ্চলের দার্জিলিংয়ে অপ্রতিরোধ্য ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যা ও ভূমিধসের ঝড়ে অন্তত ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। পাশাপাশি, সীমান্তবর্তী নেপালের বিভিন্ন এলাকায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে পৌঁছেছে। স্থানীয় সরকার কর্মকর্তারা সোমবার জানিয়েছেন, এখনও কয়েকজন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তবে দূরবর্তী এলাকাগুলি থেকে আরও তথ্য আসার সাথে সাথে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ পোস্ট করে জানান, “দুটি লৌহসেতু ধ্বংস হয়েছে, বেশ কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলা—যেখানে প্রচুর চা বাগান রয়েছে—এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজ্যের রাজধানী কলকাতার আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান এইচ. আর. বিশ্বাস জানান, দার্জিলিংয়ে সপ্তাহান্তের “অতিদীর্ঘ ভারী বৃষ্টি” শেষে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
ভারী বর্ষণের কারণে সিলিগুড়ি শহরকে হিল টাউন মিরিকের সঙ্গে সংযুক্ত করা বালাসন নদীর একটি লৌহসেতু ধসে পড়েছে। অনেক রাস্তা ধ্বসে যাওয়ায় হাইওয়ে যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জানান, প্রচুর ধ্বংসাবশেষ রাস্তার উপর ছড়িয়ে থাকায় উদ্ধারকারীরা অনেক দূরবর্তী এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না।
দার্জিলিং, হিমালয়ের চা বাগান ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শনীয় দৃশ্যের জন্য পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যটকদের সতর্ক করে বলেছেন, “পর্যটকরা নিরাপদে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত স্থানান্তর না হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে থাকুন।”
সীমান্তের ওপারে নেপালে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর। পূর্ব নেপালের ইলাম জেলার পৃথক ভূমিধসে ৩৭ জন নিহত হয়েছে। নেপালের আর্মড পুলিশ ফোর্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, উদ্ধারকারীরা মাটি ও ধ্বংসাবশেষ খুঁড়ে বেঁচে যাওয়া মানুষ খুঁজছেন এবং একাধিক গ্রামে ভূমিধসের কারণে ধ্বংস হওয়া রাস্তা পরিষ্কার করছেন।
ভারতের দার্জিলিং এবং নেপালের এই পাহাড়ি এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত হলেও, এই ধরনের ভারী বর্ষণ ও ভূমিধস প্রমাণ করছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি কতটা মারাত্মক হতে পারে।