২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক খাদ্যের চাহিদা প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এতে ২০৫০ সালের মধ্যে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হবে। এই প্রবৃদ্ধি কৃষি খাতে বিপুল কর্মসংস্থানের পথ খুলে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় ‘এগ্রিকানেক্ট’ উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (আইএফএডি)-এর সভাপতি আলভারো লারিও।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, আগামী এক দশকে ১.২ বিলিয়ন তরুণ উন্নয়নশীল দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে। বর্তমানে কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫ কোটি ক্ষুদ্র কৃষকের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে আইএফএডি অন্তত ৭ কোটি ক্ষুদ্র কৃষক ও খাদ্য উৎপাদককে সহায়তা করবে।
‘এগ্রিকানেক্ট’ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র কৃষকের জীবিকা রূপান্তর, কৃষি ব্যবসায় নতুন কর্মসংস্থান তৈরি ও বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করা। এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হবে বিশ্বব্যাংক, আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের যৌথ সহযোগিতায়।
আইএফএডি সভাপতি লারিও বলেন, “ক্ষুদ্র কৃষকের আয় বৃদ্ধি, উৎপাদন উন্নয়ন এবং বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। গ্রামীণ এলাকাকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত করতে চাই।”
গত পাঁচ দশক ধরে ইফাদ বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক গ্রামীণ অঞ্চলে বিনিয়োগ করছে। ২০২২–২০২৪ সালের প্রকল্পে অংশ নেওয়া কৃষকরা গড়ে ৩৪ শতাংশ আয় বৃদ্ধি, ৩৫ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৩৪ শতাংশ বাজারে প্রবেশাধিকারের সুবিধা পেয়েছেন।
২০১৯–২০২৩ সালে ইফাদের ৭০ শতাংশ প্রকল্পে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিল। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য সরাসরি ঋণ ও ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের অর্থনৈতিক সুযোগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো হয়েছে।
ইফাদ এখন সবুজ কর্মসংস্থান, ডিজিটাল উদ্ভাবন, কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দিচ্ছে। এতে তরুণ প্রজন্ম কৃষিতে যুক্ত হতে আগ্রহী হবে।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য হ্রাসে অন্য খাতের তুলনায় ২–৩ গুণ বেশি কার্যকর। বর্তমানে বিশ্বের ৮০ শতাংশ দরিদ্র মানুষ গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করে। তাদের উন্নয়ন ছাড়া বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই হবে না। আফ্রিকার কৃষি ব্যবসা খাতের বাজারও ২০৩০ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।