রাশিয়ার প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রিপোর্টে বলা হয়েছে, টমাহক ধরনের দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে সরবরাহ করা হলে মস্কো-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমন কড়া হুঁশিয়ারি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
উক্ত হুঁশিয়ারি দুই নেতার প্রায় আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী ফোনালাপের সময় দেওয়া হয়। মস্কোতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পুতিনের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেন, পুতিন তার অবস্থান পুনরায় স্পষ্ট করেছেন যে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে বাস্তবতা বদলাতে সক্ষম হবে না; বরং এসব সরবরাহ দুই দেশের সম্পর্ক ও ইউক্রেনে শান্তি আলোচনা চালনার সম্ভাবনাকে বড় ধাক্কা দেবে।
উশাকভ বলেছেন, দুই নেতার ফোনালাপ ছিল “খুবই ফলপ্রসূ, খোলামেলা ও গোপনীয়” এবং আলোচনায় মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ ও সেই সংঘাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশদ মূল্যায়ন উঠে আসে। রুশ অংশের বক্তব্যে বলা হয়েছে, মস্কো এখনো পুরো ফ্রন্টলাইনে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে বলে তারা ট্রাম্পকে জানিয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন।
উশাকভ আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের একটি প্রধান বক্তব্য ছিল—যুদ্ধাবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হবে।
দুই দেশ কর্মকর্তারা সামনে রেখে সরাসরি সাক্ষাতের সম্ভাবনাও উত্থাপন করেন। উভয় পক্ষ সম্মত হয়ে পরবর্তী ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের প্রস্তুতি দ্রুত শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন; সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বুদাপেস্টের নাম আলোচনায় আসে। পুতিন ও ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সরাসরি মুখোমুখি সাক্ষাৎ আগস্টে আলাস্কায় হয়েছিল, যেখানে তখনকার শান্তি আলোচনা তত্পরতা হারায়। এরপর থেকে ট্রাম্প ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
ফোনালাপের পর ট্রাম্প তার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, তিনি ও পুতিন বুদাপেস্টে সাক্ষাৎ করে “যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা” করবেন; আগে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবে বলে উল্লেখ আছে। একই সঙ্গে হোয়াইট হাউসে ওই শুক্রবার ট্রাম্প-এর ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক নির্ধারিত ছিল; সেখানে আলোচনা হবে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ বিষয়ক।
এ ছাড়াও প্রতিবেদনে স্মরণ করা হয়েছে, মাসের শুরুতে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে “চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কাছাকাছি” আছেন।