Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Tue, Oct 21, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বানিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • প্রযুক্তি
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » ভারতে মুসলিমদের নীরব যন্ত্রণার গল্প
    আন্তর্জাতিক

    ভারতে মুসলিমদের নীরব যন্ত্রণার গল্প

    হাসিব উজ জামানOctober 20, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    আজকের ভারতের প্রতিটি সকাল দুই ধরনের খবরের সঙ্গে শুরু হয়। একদিকে টেলিভিশনের পর্দায় চলতে থাকে সুপরিকল্পিত খবর: পাকিস্তান, হিন্দু অহংকার, “নতুন ভারত” নিয়ে বিতর্ক। অন্যদিকে, যা প্রচার হয় না কিন্তু সত্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তা হলো মুসলিমদের প্রতি সহিংসতা—লিঞ্চিং, হয়রানি, আটক, কলঙ্কিত করা। এই দুইয়ের মধ্য দিয়ে যে বার্তা যায়, তা ভীতিকর: মুসলিমদের দুঃখ হয় অদৃশ্য বা শো-স্পেক্টেকেলের অংশ, যা সংখ্যাগরিষ্ঠরা যেন বিনোদনের মতো ভোগ করে, আর মুসলিমদের জীবন যেন চিরকাল অপরাধীর মতো, সবসময় অভিযোগে জড়িত, কিন্তু কখনও শোনা হয় না।

    এই সেপ্টেম্বরে আজমগড়ে সাত বছরের এক মুসলিম শিশুর হত্যাকাণ্ড মনে করিয়ে দেয় এই বাস্তবতা। শিশুর দেহ ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়া হয়, প্রতিবেশীরা ঘরের বাইরে এটি দেখতে পান—যাদের পরে আটক করা হয়। স্থানীয় সংবাদ প্রথমে খবরটি প্রকাশ করলেও, শীঘ্রই এটি প্রধান সময়ের টেলিভিশনে অদৃশ্য হয়ে যায়। এর পরিবর্তে আলোড়িত বিতর্ক শুরু হয় “লাভ জিহাদ”, সীমান্ত উত্তেজনা, বা ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে। এক মুসলিম শিশুর মৃত্যু জাতীয় রোষের কাহিনিতে ফিট হয়নি। এটি হয়ে যায় নীরব সহিংসতার অংশ, যা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সমাজবিজ্ঞানী স্ট্যানলি কোহেন একবার লিখেছেন “স্বীকারোক্তির অবস্থা” সম্পর্কে: এমন সমাজ যেখানে নির্যাতন লুকানো হয় না, বরং এত স্বাভাবিক হয়ে যায় যে আর কেউ হতবাক হয় না। আজকের ভারত ঠিক তেমন। দিনের আলোয় মুসলিমদের হত্যাকাণ্ড ঘটে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠরা তা কেবল ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা শব্দ মনে করে।

    ঘৃণা শুধু নীরবতা নয়, এটি এখন এক ধরনের নাট্যশালা। কানপুরে মুসলিমরা যখন প্ল্যাকার্ড হাতে ধরেন “আমি মুহাম্মদকে ভালোবাসি”, পুলিশ তাদের রক্ষা না করে ১৩০০ মুসলিমের বিরুদ্ধে এফআইআর করে এবং অনেককে আটক করে। প্রেমের এই প্রকাশকেই অপরাধ বানানো হয়। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্র বা মধ্যপ্রদেশে হিন্দুত্ববাদী ভিড় খোলাখুলিভাবে গণহত্যার ডাক দেয়, টেলিভিশন ক্রু হয়তো তাদের গ্লোরিফাই করে বা চুপচাপ দৃষ্টি সরায়। মুসলিমদের ওপর সহিংসতা এখন এক ধরনের নাটক, যেখানে মুসলিমরা সর্বদা বিচারাধীন, আর হিন্দুত্ববাদী শক্তিরা সভ্যতার রক্ষক।

    এই নির্বাচিত দৃশ্যমানতা ইচ্ছাকৃত। ইন্দোরে “জিহাদি-মুক্ত বাজার” তৈরি হওয়া, যেখানে মুসলিম ব্যবসায়ীরা রাতারাতি বহিষ্কৃত হন, এটি এক অর্থনৈতিক লিঞ্চিং। পুরো পরিবারে চাকরি চলে যায়, স্কুল থেকে সন্তান বের হয়, নারী প্রতিবেশীর কাছে ভিক্ষা করতে বাধ্য হন। অথচ জাতীয় মিডিয়ায় এটি দেখানো হয় “আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয়” হিসেবে, মানবিক ক্ষতির প্রতি কোনো গুরুত্ব দেয়া হয় না। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়ায় উদযাপন করে, মুসলিমদের সম্পত্তি লুটকে ভাইরাল বিনোদনে পরিণত করে। যা জাতীয় কেলেঙ্কারি হওয়া উচিত ছিল, তা হয়ে যায় “স্থানীয় উত্তেজনা”।

    উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই নাটকের প্রতীক। তিনি সরকারি মঞ্চ থেকে মুসলিমদের “অবৈধ” এবং “সন্ত্রাস-সহমত” বলে অভিহিত করেন। এরা কোনো প্রান্তিক বক্তব্য নয়; এরা শাসক শক্তি। তবু, তথাকথিত বিরোধী দলগুলো উত্তেজনা প্রকাশের বদলে হালকা হিন্দুত্ববাদী সংস্করণ তৈরি করে, কে বেশি “প্রো-হিন্দু” তা প্রমাণ করতে প্রতিযোগিতা করে, মুসলিমদের ভয়কে নীরব করে। এই দ্বিপক্ষীয় সহমত স্পষ্ট করে দেয়: আজকের ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিমরা আর রাজনৈতিক বিষয় নয়; তারা রাজনৈতিক প্রপস।

    এই দমন শুধু শারীরিক নয়; এটি মানসিক ও অস্তিত্বগত। আজকের মুসলিম হিসেবে বাঁচার মানে হলো চিরকাল সন্দেহভাজন হয়ে থাকা—মসজিদে নজর রাখা, বাজারে বিচার করা, বিদ্যালয়ে সন্দেহ করা। প্রতিটি জুম্মার নামাজ ঝুঁকির মতো। আজানের শব্দও অনেকের কাছেprovocation, অথচ এটি একটি সম্প্রদায়ের হৃদস্পন্দন। উর্দু কবি সাহির লুধিয়ানভী একবার লিখেছেন, “যাদের গর্ব ভারতের উপর, তারা কোথায়?” আজকের প্রশ্নও একই: যদি এইই ভারতের মহত্ত্ব, তাহলে কেন প্রতিদিন মুসলিমদের বিনম্রতা প্রমাণ করতে হয়?

    উগান্ডার জন্ম নেওয়া মুসলিম চিন্তাবিদ মাহমুদ মামদানি এই বাস্তবতা বোঝার কাঠামো দেন। তার বিখ্যাত বই Good Muslim, Bad Muslim-এ তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে রাষ্ট্র ও সমাজ মুসলিমদের দুই শ্রেণিতে ভাগ করে: “গ্রহণযোগ্য” মুসলিম, যে চুপচাপ থাকে, আর “বিপজ্জনক” মুসলিম, যে মর্যাদা বা অধিকার চায়। ভারতে এই বিভাজন প্রতিদিন অস্ত্রের মতো ব্যবহার হয়। যে মুসলিম তার বিশ্বাস লুকায়, অদৃশ্য থাকে, তাকে সহ্য করা হয়। কিন্তু যে মুসলিম তার পরিচয় প্রকাশ করে—যে পাবলিকভাবে বলে “আমি মুহাম্মদকে ভালোবাসি”, সমান অধিকার চায়, কিংবা স্বীকৃতি চায়—তাকে সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধী বানানো হয়। মামদানি স্মরণ করান, এটি ধর্ম নয়; এটি ক্ষমতার খেলা: কে বৈধ, কে সন্দেহের অধীনে।

    এই কারণেই লিঞ্চিং ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে মেমের মতো ছড়ায়, অ্যাঙ্কররা “মুসলিম জনসংখ্যা বিস্ফোরণ” নিয়ে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব ছড়ায় হাসি মুখে, এবং ভিড় দোকান জ্বালানোর পরে হাসে। ঘৃণা এখন কেবল রাজনীতি নয়; এটি হয়ে গেছে সামাজিক বিনোদন। নিষ্ঠুরতা যখন কমেডিতে পরিণত হয়, অপমান যখন প্রাইম-টাইম স্ক্রিপ্ট হয়, তখন গণতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদীর মধ্যে রেখা ইতিমধ্যেই মুছে গেছে।

    ইতিহাস সতর্ক করে দেয়: যারা সংখ্যালঘুর দুঃখকে বিনোদনে পরিণত করে, সেই সমাজও টিকে থাকে না। নাজি র‍্যালিতে জার্মান লিবারালদের নীরবতা, কৃষ্ণাঙ্গদের লিঞ্চিংয়ে আমেরিকানদের উদাসীনতা, গাজায় বোমাবর্ষণে ইস্রায়েলি জনতার উল্লাস—সবই স্মরণ করিয়ে দেয় যে ঘৃণা-ভিত্তিক বিনোদন শেষ পর্যন্ত সমাজকেই ধ্বংস করে। ভারতও ব্যতিক্রম নয়।

    সুতরাং প্রশ্ন ফিরে আসে: আমরা মুসলিম নাকি অপরাধী? কেন আমাদের প্রতিদিন বিচার করা হয়, কিন্তু খুনিরা মুক্ত? কেন আমাদের সন্তানের মৃত্যু মুছে ফেলা হয়, অথচ রাষ্ট্র উদযাপন করে “অমৃত কাল”? উত্তর শুধু মুসলিমদের নয়; এটি ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর। তারা কি ঘৃণাকে তাদের প্রিয় সিরিয়ালের মতো দেখতে থাকবে, নাকি পর্দা বন্ধ করবে?

    যদি আজ ঘৃণার জন্য তালি বাজানো হয়, আগামীকাল সেই দেশই আপনার জন্য জেল হয়ে উঠবে। তখন ঘৃণার হাসি এই প্রজাতন্ত্রে একমাত্র শব্দ হয়ে থাকবে। ইতিহাস তখন প্রশ্ন করবে না আপনি হিন্দু নাকি মুসলিম, ডানপন্থী নাকি লিবারেল—সেটি শুধু প্রশ্ন করবে কেন সভ্যতা নিয়ে গর্ব করা সমাজ নিষ্ঠুরতাকে কমেডিতে পরিণত করল এবং নীরবতাকে সম্মতি হিসেবে মেনে নিল।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    আন্তর্জাতিক

    গাজা ইস্যুতে রাশিয়া-চীন কেন নীরব?

    October 21, 2025
    আন্তর্জাতিক

    রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন জিতবে কি না সন্দিহান ট্রাম্প

    October 21, 2025
    আন্তর্জাতিক

    হাসির ফেরিওয়ালা আসরানি আর নেই

    October 21, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.