বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে এবারই প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিমান মহড়া চালাচ্ছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে তারা ‘নোটাম’ (Notice to Air Missions) জারি করেছে, যা আকাশসীমায় সামরিক অনুশীলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
‘রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নোটামটি ৬ ও ২০ নভেম্বর কার্যকর ছিল এবং ডিসেম্বরের ৪ ও ১৮ তারিখ, জানুয়ারির ১ ও ১৫ তারিখেও বলবৎ থাকবে। এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গজরাজ’, যা নজীরবিহীনভাবে বাংলাদেশ, চীন, ভুটান ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী আকাশসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত।
সাধারণত নোটাম জারি করে কোনো দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, যাতে আকাশপথে অস্থায়ী পরিবর্তন, সামরিক অনুশীলন বা ঝুঁকির তথ্য জানানো যায়। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে সরাসরি ভারতীয় বিমান বাহিনী নোটাম জারি করেছে। এতে নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তের আকাশসীমা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মহড়াটিতে অংশ নিচ্ছে রাফাল ও সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান, ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি আক্রমণ হেলিকপ্টার ‘প্রচণ্ড’ এবং গোয়েন্দা নজরদারি ইউনিট। অনুশীলনের অন্তর্ভুক্ত থাকছে আকাশযুদ্ধ, স্থল আক্রমণ ও গোয়েন্দা তৎপরতা—যার মূল লক্ষ্য সীমান্ত অঞ্চলে ভারতের আকাশ নিয়ন্ত্রণ ও যুদ্ধ প্রস্তুতি বাড়ানো।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মতে, এই মহড়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। এটি প্রতিবেশী দেশগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছে যে ভারত সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত।
যদিও মহড়ার অবস্থান বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে এটি পরিচালিত হচ্ছে—এমন কোনো উল্লেখ নেই।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সামরিক আধুনিকীকরণ, বিশেষ করে চীন থেকে ২০টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার ঘোষণা নয়াদিল্লির নজর কাড়ছে। এ ছাড়া ড্রোন ক্রয় ও তুরস্কের সহায়তায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ ভারতের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকদের মন্তব্য।
এছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়েও ভারতীয় নীতি–নির্ধারকদের মধ্যে সতর্কতা দেখা গেছে।

