যুক্তরাষ্ট্রে টানা ৩৫ দিন ধরে সরকারি অচলাবস্থা বা শাটডাউন চলায় দেশটির বিমান চলাচলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ এই স্থবিরতায় বেতন না পেয়ে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের অনুপস্থিতি বাড়ছে, যার প্রভাবে শত শত ফ্লাইট বাতিল ও হাজারো ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, সরকারের অচলাবস্থার কারণে তাদের ৩০টি বড় বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের অর্ধেকেই জনবল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিউইয়র্ক অঞ্চলের বিমানবন্দরগুলোতে অনুপস্থিতির হার পৌঁছেছে ৮০ শতাংশে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়্যার–এর তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ হাজার ৭০০টির বেশি ফ্লাইট দেরিতে ছেড়েছে এবং ২ হাজার ২৮২টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। সোমবারও পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে শিকাগো, ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ, ডেনভার ও নিউয়ার্কসহ প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে আরও ৪ হাজার ফ্লাইট দেরিতে ছাড়ে ও ৬০০টির বেশি বাতিল হয়।
এফএএ জানায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে প্রয়োজনে বিমান চলাচলের সংখ্যা সীমিত করা হবে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, শাটডাউন অব্যাহত থাকলে যাত্রীরা আরো বিলম্ব ও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারেন।
পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি সিবিএস নিউজকে বলেন, “নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাবে। প্রয়োজনে ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হবে।” তিনি আরো জানান, অনেক এটিসি কর্মকর্তা জীবিকা নির্বাহের জন্য বিকল্প পেশায় কাজ করছেন, তবে তাদের কেউ বরখাস্ত হবেন না।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন ৩৫তম দিনে গড়িয়েছে, যা ২০১৮–২০১৯ সালের অচলাবস্থার সমান দীর্ঘ এবং দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সরকারি স্থবিরতা হিসেবে রেকর্ড গড়েছে। বর্তমানে অন্তত ৬ লাখ ৭০ হাজার বেসামরিক ফেডারেল কর্মী বাধ্যতামূলক ছুটিতে এবং প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার কর্মী বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

