হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো হাউজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সিলগালা করা স্ট্রং রুমের তালা ভাঙা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভেতরে রাখা মূল্যবান সামগ্রী ও স্পর্শকাতর নথি খোয়া যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আগুনে স্ট্রং হাউজের ভল্টের কোনো কাগজপত্র বা মালামাল পুড়ে যায়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য আমদানি করা বিপুলসংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্রও ওই রুমে ছিল, যা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। যদিও এখন পর্যন্ত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কেউই নিশ্চিত করেনি, কোনো অস্ত্র বা নথি খোয়া গেছে কি না।
ঘটনার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পুলিশ ও সিআইডির ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে তালা কাটার সরঞ্জাম ও অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছে।
বিমানবন্দর থানার জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ অক্টোবর বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে কাস্টমস, বিমানের কার্গো বিভাগ, এনএসআই ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে স্ট্রং রুমের ইনভেন্টরি শেষ করে ভল্ট তালাবদ্ধ ও সিলগালা করা হয়। ২৭ অক্টোবর রাত ৯টা ৫০ মিনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সর্বশেষ সিল অক্ষত অবস্থায় দেখে যান। কিন্তু পরদিন সকালে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এসে দেখেন, ভল্টের তালা আর নেই।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, “স্ট্রং রুমের কাছে পুলিশের কোনো দায়িত্ব নেই। তবে তালা ভাঙার বিষয়ে বিমানবন্দর থানায় জিডি হয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। ভেতর থেকে কিছু খোয়া গেছে কি না তা এখনো জানা যায়নি।”
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, এই স্ট্রং রুমে সাধারণত স্বর্ণ, হীরা, আগ্নেয়াস্ত্রসহ উচ্চমূল্যের পণ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত নথি রাখা হয়। সেখানে প্রবেশ বা পণ্য উত্তোলনের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ও স্বাক্ষর অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
তারা আরো বলেন, গত ১৮ অক্টোবরের অগ্নিকাণ্ডের পর পুরো কার্গো হাউজে কঠোর নিরাপত্তা বলবৎ করা হয় এবং স্পর্শকাতর এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবুও এই নিরাপত্তাবেষ্টিত জায়গায় তালা ভাঙার ঘটনা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

