যুক্তরাষ্ট্রের নৌসামরিক প্রভাবের সমান্তরালে চীন আরো এক ধাপ এগিয়েছে। দেশটির সবচেয়ে বড় ও আধুনিক বিমানবাহী রণতরী ‘ফুজিয়ান’ আনুষ্ঠানিকভাবে চীনা নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শুক্রবার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হাইনান দ্বীপের সানিয়া সামরিক বন্দরে ‘ফুজিয়ান’-এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই রণতরী চীনের তৃতীয় ও সর্বাধুনিক বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ।

‘ফুজিয়ান’-এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক এয়ারক্রাফট লঞ্চ সিস্টেম (EMALS)। এই প্রযুক্তি বিমানগুলোকে বিদ্যুত-চুম্বকীয় শক্তির মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম, ফলে যুদ্ধবিমানগুলো অধিক অস্ত্র ও জ্বালানি বহন করতে পারে এবং দীর্ঘ দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। বর্তমানে এমন প্রযুক্তি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের ‘USS জেরাল্ড আর ফোর্ড’-এ রয়েছে।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে দুই হাজারের বেশি নৌসদস্য ও নির্মাণকর্মী উপস্থিত ছিলেন। শি জিনপিং পতাকা উত্তোলন করেন, রণতরী ঘুরে দেখেন এবং পরীক্ষামূলকভাবে বিমান উৎক্ষেপণের বোতাম চাপেন। ফ্লাইট ডেকে প্রদর্শন করা হয় চীনের জে-৩৫, জে-১৫ এবং কেজে-৬০০ যুদ্ধবিমান। কাছেই ছিল দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী ‘শানডং’, যা শক্তি প্রদর্শনকে নতুন মাত্রা দেয়।

‘ফুজিয়ান’ ২০২২ সালে পানিতে ভাসানো হয় এবং ২০২৪ সালে সমুদ্র মহড়া শুরু করে। এটি ৮০ হাজার টন ওজন বহন করতে সক্ষম, যা যুক্তরাষ্ট্রের ৯৭ হাজার টনের নিমিৎজ-ক্লাস রণতরীর কাছাকাছি। তবে এটি প্রচলিত জ্বালানিতে চলে, তাই দীর্ঘ সমুদ্র অভিযানে এটি জ্বালানি সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে পারে।
চীন ইতোমধ্যেই টাইপ ০০৪ নামের আরো একটি রণতরী তৈরির কাজ শুরু করেছে, যা পারমাণবিক শক্তিচালিত এবং EMALS প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। দ্রুত সামরিক আধুনিকীকরণ ও নৌবাহিনীর সম্প্রসারণে শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চীন এখন বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনীর দিকেও এগিয়ে।

