নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির কাছে নিজের সমর্থিত প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর পরাজয় যেন মেনে নিতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই এবার তিনি নিউইয়র্ক রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে উদগ্র আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
নিউইয়র্ক রাজ্যের রাজনীতিতে ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান এলিস স্টেফানিককে নিয়ে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ কারণেই তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান (প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য) এলিস স্টেফানিককে ২০২৬ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য গভর্নর নির্বাচনে লড়তে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ট্রাম্প নিউইয়র্কের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নেওয়ার প্রচেষ্টায় নেমেছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
স্টেফানিকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন বর্তমান গভর্নর ও ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী ক্যাথি হচুল। নিজের প্রার্থিতা ঘোষণার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ স্টেফানিক হচুলকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ব্যর্থ গভর্নর’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর দুর্বল নেতৃত্ব নিউইয়র্ককে দেশের ‘সবচেয়ে ব্যয়বহুল রাজ্যে’ পরিণত করেছে।
৪১ বছর বয়সী এলিস স্টেফানিক ২০১৪ সাল থেকে নিউইয়র্কের ২১তম কংগ্রেসনাল আসনের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম অভিশংসনের সময় তিনি ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান সমর্থক হিসেবে আলোচনায় আসেন।

ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত স্টেফানিক নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানিকে দেরিতে সমর্থন জানানোর জন্য গভর্নর হচুলকে তীব্র সমালোচনা করেন।
তাঁর ভাষায়, হচুল “নিউইয়র্ক পুলিশের তহবিল কমানোর ও কর বৃদ্ধি করা এক কমিউনিস্ট প্রার্থী” জোহরান মামদানির কাছে মাথা নত করেছেন, যা সাধারণ পরিবারগুলোর জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।
অন্যদিকে গভর্নর ক্যাথি হচুল স্টেফানিকের ঘোষণার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে ট্রাম্পের “কংগ্রেসে এক নম্বর চিয়ারলিডার” ও “নিউইয়র্কের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের যুদ্ধে তাঁর ডান হাতের নারী” বলে উল্লেখ করেন।
স্টেফানিককে একসময় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত হিসেবে মনোনীত করেছিলেন ট্রাম্প। তবে রিপাবলিকানদের কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার প্রয়োজন বিবেচনা করে তিনি পরে সেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
গত সেপ্টেম্বরে সিয়েনা কলেজ পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, গভর্নর হচুলের প্রতি জনসমর্থন ৫২ শতাংশ, আর স্টেফানিকের প্রতি সমর্থন মাত্র ২৭ শতাংশ ভোটারের। তবে একই জরিপে অংশ নেওয়া ৫২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা ২০২৬ সালের নির্বাচনে হচুলের পরিবর্তে অন্য কাউকে গভর্নর হিসেবে দেখতে চান।
গভর্নর প্রার্থিতা পেতে স্টেফানিককে রিপাবলিকান দলের প্রাথমিক নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, আর হচুলকেও তাঁর উপগভর্নর অ্যান্টনি ডেলগাডোর কাছ থেকে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে রিপাবলিকান দলের শেষ গভর্নর ছিলেন জর্জ পাটাকি, যিনি ২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।

