যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে কমপক্ষে ২ হাজার ডলার করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সরকারি অচলাবস্থার মধ্যে এই ঘোষণা এনে দিয়েছেন তিনি, যা ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
ট্রাম্প জানান, মূলত ট্যারিফ বা শুল্ক থেকে যে বিপুল রাজস্ব আয় হচ্ছে, সেখান থেকেই এই অর্থ বিতরণ করা হবে। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ ট্রাম্প লিখেছেন, “প্রত্যেক মার্কিন নাগরিক অন্তত ২ হাজার ডলার পাবেন, তবে উচ্চ আয়ের মানুষদের এ থেকে বাদ রাখা হবে।”
এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থা বা ‘শাটডাউন’ টানা ৪০ দিনে পা দিয়েছে। সরকারি তহবিল বন্ধ থাকায় খাদ্য সহায়তা ও বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি স্থবির হয়ে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে সাংবিধানিক প্রশ্ন তুলেছে— আর সেই বিতর্কের মধ্যেই প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণা এসেছে।
ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, “এই ২ হাজার ডলারের লভ্যাংশ নানা উপায়ে দেওয়া হতে পারে—এর মধ্যে কর ছাড় বা বোনাস আয়ের ওপর করমুক্ত সুবিধাও থাকতে পারে।”
অন্যদিকে, নিজের শুল্কনীতির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে ট্রাম্প বলেন, “যারা ট্যারিফের বিরোধিতা করছে, তারা আসলে বোকা। আজ আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও মর্যাদাপূর্ণ দেশ। মুদ্রাস্ফীতি নেই বললেই চলে, আর শেয়ারবাজার রেকর্ড উচ্চতায়।”
তিনি আরও দাবি করেন, শুল্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ‘ট্রিলিয়ন ডলার’ রাজস্ব অর্জন করেছে, যা দিয়ে ধীরে ধীরে ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলারের জাতীয় ঋণ পরিশোধ শুরু হবে।
তবে এই অর্থ বিতরণ কার্যকর করতে কংগ্রেসের অনুমোদন জরুরি। বাজেট ইস্যুতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অচলাবস্থা অব্যাহত থাকায় এখনই পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবুও, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ অনেকের কাছে এক সাহসী রাজনৈতিক চাল — যা একদিকে জনগণের মন জয় করতে পারে, আবার অন্যদিকে কংগ্রেসের সঙ্গে নতুন করে সংঘাতও সৃষ্টি করতে পারে।

