যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য দেওয়া সাময়িক আইনি স্বীকৃতি বা টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস) শেষ হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন সোমবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। প্রশাসন যুক্তি দিয়েছে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এতটা উন্নত হয়েছে যে নাগরিকেরা নিরাপদে দেশটিতে ফিরে যেতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে টিপিএসের সুবিধা পাওয়া প্রায় চার হাজার মিয়ানমারের নাগরিক রয়েছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম জানিয়েছেন, এই সুবিধা ২৬ জানুয়ারি শেষ হবে। তিনি বলেন, ‘বার্মার পরিস্থিতি এতটাই উন্নত হয়েছে যে নাগরিকরা নিরাপদে ফিরতে পারেন। তাই আমরা সাময়িক স্বীকৃতির অবসান ঘটাচ্ছি।’
নোয়েম আরো উল্লেখ করেছেন, বার্মা সরকার জরুরি অবস্থার অবসান ঘটিয়েছে, স্বচ্ছ ও মুক্ত নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়েছে, সফল যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছে এবং স্থানীয় প্রশাসন উন্নত করেছে।
ডিএইচএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নিয়েছে এবং এতে চীনের মধ্যস্থতাও রয়েছে। এই আলোচনাকে তারা ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।
তবে আন্তর্জাতিক মহল বিশেষ করে জাতিসংঘ এই নির্বাচন ‘মুক্ত ও স্বচ্ছ’ হবে না বলে মন্তব্য করেছে। কিছু বিরোধী দল এখনও নিষিদ্ধ এবং সাবেক নেত্রী অং সান সু চি কারাগারে রয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের পরিচালক জন সিফটন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষণ কল্পনাপ্রসূত। মিয়ানমারে সরকারব্যবস্থা বা স্থিতিশীলতায় কোনো বাস্তব পরিবর্তন হয়নি।’
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য টিপিএস ১৮ মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের পূর্বসূরী জো বাইডেন প্রশাসনের সময় ২৫ নভেম্বর এ সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর দেশটিতে সশস্ত্র প্রতিরোধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরও নাগরিকদের মিয়ানমারে ভ্রমণ না করার সতর্কতা দিয়েছে।

