গত বছরে বিশ্বের ১০০টি শীর্ষ অস্ত্র প্রস্তুতকারক সংস্থার রাজস্ব ৫.৯ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৬৭৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউক্রেন ও গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং বিভিন্ন দেশের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এ চাহিদি ত্বরান্বিত হয়েছে। খবরটি সোমবার প্রকাশ করেছে স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট (সিপ্রি)।
রাজস্ব বৃদ্ধির মূল অংশ এসেছে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানিগুলো থেকে। এশিয়া ও ওশেনিয়ার অনেক অংশে বিক্রির বৃদ্ধি দেখা গেলেও, চীনা অস্ত্র শিল্পে সমস্যার কারণে এই অঞ্চলে আয় কিছুটা কমেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯টি শীর্ষ সংস্থার মধ্যে ৩০টির রাজস্ব বেড়েছে। লকহিড মার্টিন, নর্থরপ গ্রুমান ও জেনারেল ডাইনামিকসের সম্মিলিত আয় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। তবে এফ-৩৫ ফাইটার জেটসহ কয়েকটি মার্কিন প্রকল্পে বিলম্ব এবং বাজেট অতিক্রমের ঘটনা এখনও রয়েছে।
ইউরোপের ২৬টি সংস্থার মধ্যে ২৩টির অস্ত্র বিক্রির আয় বেড়ে ১৫১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার কারণে নিরাপত্তা শঙ্কায় সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এ বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। বিশেষত চেক রিপাবলিকের চেকোস্লোভাক গ্রুপের আয় ১৯৩ শতাংশ বেড়ে গেছে, যা মূলত ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ সরবরাহ প্রকল্পের কারণে। ইউক্রেনের জেএসসি ইউক্রেনিয়ান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির আয়ও ৪১ শতাংশ বেড়েছে।
ইউরোপীয় সংস্থাগুলো চাহিদা মেটাতে নতুন উৎপাদন ক্ষমতায় বিনিয়োগ করছে। তবে সিপ্রি গবেষক জেড গুইবার্টু রিকার্ড সতর্ক করেছেন যে, কাঁচামাল সংগ্রহ ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিশেষত চীনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রফতানি সীমাবদ্ধতার কারণে এই ঝুঁকি বেড়েছে।
রাশিয়ার রোস্টেক এবং ইউনাইটেড শিপবিল্ডিং করপোরেশন নিষেধাজ্ঞা ও যন্ত্রাংশ ঘাটতির সত্ত্বেও ২৩ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি দেখিয়েছে, সম্মিলিত আয় দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে। তবে দক্ষ শ্রমিক সংকট এখনও সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে র্যাঙ্কিংয়ে থাকা তিনটি ইসরায়েলি সংস্থার আয় ১৬ শতাংশ বেড়ে ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশের আগ্রহ কমেনি।
অন্যদিকে এশিয়া ও ওশেনিয়ায় অস্ত্র বিক্রির আয় ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। প্রধান কারণ সূচকে থাকা আটটি চীনা কোম্পানির আয় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

