সুদানের বিমানবাহিনী আবাসিক এলাকা, বাজার, স্কুল ও বাস্তুচ্যুত শিবিরগুলো লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ চালিয়ে অন্তত ১,৭০০ মানুষকে হত্যা করেছে। এই তথ্য সুদানের গৃহযুদ্ধ ও বিমান হামলা নিয়ে চালানো এক তদন্তে উঠে এসেছে।
‘সুদান উইটনেস প্রজেক্ট’ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক গৃহযুদ্ধের সময় সরকারি বাহিনী যে বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে এবং এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেসব তথ্য তারা বিশ্লেষণ করেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিমানবাহিনী জনবহুল এলাকায় বিশেষ করে আনগাইডেড বোমা ব্যবহার করেছে।
আনগাইডেড বোমা হলো এমন বোমা যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ছোড়া হয় না; বরং আকাশ থেকে ফেলার পর যেকোনো স্থানে পড়তে পারে। এই ধরনের বোমা ব্যবহারের ফলে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি বেশি হয়।
প্রতিবেদনটি শুধু যুদ্ধবিমান থেকে হামলার ঘটনাগুলোই বিশ্লেষণ করেছে। আরএসএফ বা প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ড্রোনের মাধ্যমে আকাশ থেকে হামলা চালিয়েছে, কিন্তু ড্রোন হামলায় হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সুদান উইটনেস প্রজেক্ট হলো সেন্টার ফর ইনফরমেশন রেজিলিয়েন্সের (সিআইআর) উদ্যোগ, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো প্রকাশ করে। এই প্রকল্পের জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তহবিল পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনের আগাম কপি অনুসারে, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সুদান উইটনেস প্রজেক্ট ৩৮৪টি বিমান হামলার ঘটনা বিশ্লেষণ করেছে। এসব হামলায় ১,৭০০-এর বেশি মানুষ নিহত ও ১,১২০ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংখ্যাগুলো সর্বনিম্ন হিসেবে ধরা হয়েছে এবং প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, যেসব এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে, সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন। যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং বিশ্বাসযোগ্য সূত্র চিহ্নিত করা দুরুহ। এছাড়া সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার সংখ্যার তথ্য সম্ভবত পুরোপুরি জানা যায়নি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩৮৪টি হামলার মধ্যে ৩৫টি ঘটনা বাজার বা বাণিজ্যিক স্থানে এবং ১৯টি ঘটনা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘটিত হয়েছে। হামলার সময় এসব স্থানে মানুষের ঘন ভিড় ছিল।

