দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান উভয় দেশের কাছাকাছি রাশিয়া এবং চীন যৌথভাবে বোমারু বিমানের টহল চালিয়েছে। টোকিও ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল। সূত্র: আল জাজিরা
সিউলে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের অফিস অনুসারে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সাতটি রাশিয়ান এবং দুটি চীনা বিমান দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলে (কেএডিআইজেড)-এ প্রবেশ করেছে।
যুদ্ধবিমান এবং বোমারু বিমানসহ বিমানগুলো কেএডিআইজেড-এ প্রবেশের আগেই দেখা গিয়েছিল, যা আঞ্চলিক আকাশসীমা নয়। কিন্তু যেখানে বিমানগুলোকে নিজেদের পরিচয় জানাতে হয়। এদিকে প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়া ‘যেকোনো সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য কৌশলগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যুদ্ধবিমান’ মোতায়েন করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, ‘সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ান এবং চীনা বিমানগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা অঞ্চলে এক ঘন্টা উড়েছিল এবং পরে চলে যায়।’
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি বলেছেন, ‘রাশিয়া ও চীনের যৌথ টহলের খবরের পর সম্ভাব্য আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য জাপান পৃথকভাবে সামরিক বিমান মোতায়েন করেছে।’

মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক বিবৃতিতে কোইজুমি বলেন, ‘দুটি রাশিয়ান পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ‘টিইউ-৯৫’ বোমারু বিমান জাপান সাগর থেকে সুশিমা প্রণালীতে উড়ে এসেছিল এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম দুটি চীনা জেটের মুখোমুখি হয়েছিল।’
কোইজুমি আরো বলেন, বেমারু বিমানগুলোর সঙ্গে আরো আটটি জে-১৬ যুদ্ধবিমান এবং একটি রুশ এ-৫০ বিমানও ছিল। তারা জাপানের ওকিনাওয়ার প্রধান দ্বীপ এবং মিয়াকো দ্বীপের মধ্যে ঘুরছিল। তিনি জানান, ‘উভয় দেশের যৌথ বোমারু বিমানের বারবার উড্ডয়ন আমাদের দেশের চারপাশে তাদের কার্যক্রম বাড়াচ্ছে।
স্পষ্টতই আমাদের জাতির বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে, যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ।’
সোমবার জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা শুক্রবার থেকে ওকিনাওয়ার কাছে চীনা বিমানবাহী রণতরী লিয়াওনিং এবং সঙ্গে থাকা সহায়ক জাহাজের গতিবিধি নজরদারি করছে। রণতরীতে থাকা চীনা বিমানগুলোর উড্ডয়ন ও অবতরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ‘বার্ষিক সহযোগিতা পরিকল্পনা’ অনুযায়ী রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ বিমান মহড়া করেছে। মহড়াটি পূর্ব চীন সাগর এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের উপরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি রাশিয়ার সঙ্গে ‘দশম যৌথ কৌশলগত বিমান টহল’।
মস্কোও যৌথ মহড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং জানিয়েছে, মহড়াটি আট ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছিল। কিছু বিদেশি যুদ্ধবিমান রাশিয়ান ও চীনা বিমানকে অনুসরণ করেছিল। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘মহড়ার নির্দিষ্ট অংশে বিদেশি রাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান কৌশলগত বোমারু বিমানগুলোকে অনুসরণ করেছিল।’ ২০১৯ সাল থেকে চীন ও রাশিয়া নিয়মিতভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নিকটবর্তী আকাশসীমায় সামরিক বিমান উড়াচ্ছে, যৌথ মহড়ার অংশ হিসেবে।

