পাকিস্তানে চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৩ হাজার ৮২২ জন নিহত হয়েছেন। এটি ২০১৫ সালের পর প্রথমবারের মতো এক বছরে এত উচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা।
দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাসবাদের পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা সাউথ এশিয়া টেরোরিজম পোর্টাল (এসএটিপি) বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৪ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়ে নিহতের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে নিহতের সংখ্যা ২০১৫ সালের তুলনায় ৭০.৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাকিস্তানের ইতিহাসে এক বছরে সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসী নিহতের ঘটনা ঘটে ২০১৪ সালে। সেই বছর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে টিটিপির হামলায় ১৫০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ১৩৪ জন শিক্ষার্থী। পরের বছর- ২০১৫ সালে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৮৫ জন।
২০১৫ সালের পর কয়েক বছর ধরে নিহতের সংখ্যা কমে আসলেও- ২০২২ সাল থেকে আবার বৃদ্ধি শুরু হয়। বিশেষ করে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের প্রতিষ্ঠার পর, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ায় তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সক্রিয়, আর বেলুচিস্তানে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) বিস্তৃত কার্যক্রম চালাচ্ছে। উভয়ই পাকিস্তানে নিষিদ্ধ গোষ্ঠী। ইসলামাবাদের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও অস্ত্র সরবরাহ করছে; তবে তালেবান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর আগে, থিংকট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস) জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পাকিস্তানে সন্ত্রাসী সহিংসতার হার তিন মাসে ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৫ সালে সন্ত্রাসবাদের এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে উদ্বেগজনক অবস্থায় নিয়ে এসেছে।

