১১ অক্টোবর ২০২৪, স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। পুরস্কারটি পেয়েছে জাপানি সংগঠন নিহন হিদানকায়ো, যা পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার উদ্যোগ ও প্রচারণার স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মাননা অর্জন করেছে।
নিহন হিদানকায়ো একটি পরমাণু অস্ত্র-বিরোধী সংগঠন, যা হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় জীবিত থাকা বা প্রভাবিত হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে পরমাণু অস্ত্র বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। এই সংগঠনটি মূলত ‘হিবাকুশা’ নামে পরিচিত সেইসব ব্যক্তিদের নিয়েই কাজ করে, যারা ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছিলেন।
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সংগঠনটি বিপর্যয়ের প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান তুলে ধরেছে, যা বিশ্ববাসীকে বুঝতে সাহায্য করেছে যে, এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার আর কখনোই উচিত নয়। গত বছর ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদী।
পুরস্কারের ঘোষণা নোবেলপ্রাইজ ডট ওআরজি এবং নোবেল পুরস্কারের অফিসিয়াল ডিজিটাল চ্যানেলগুলো, যেমন ফেসবুক, এক্স ও ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এ বছর শান্তি পুরস্কারের জন্য নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট মোট ২৮৬ জন প্রার্থীর নাম নিবন্ধন করেছিল, যার মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি এবং ৮৯টি সংস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১৪ বার নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ১১১ ব্যক্তি ও ৩০ সংস্থা মিলে পুরস্কার বিজয়ীর সংখ্যা ১৪১। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি তিনবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরও দুইবার এই সম্মাননা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের জন্যও এ পুরস্কারের ইতিহাস উল্লেখযোগ্য। ২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক সমাজের ‘নীচ থেকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন’ করার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।
আগামী ১৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে ছয় নম্বর ও সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা সম্পন্ন হবে।