Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Thu, Jul 17, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • খেলা
    • প্রযুক্তি
    • বিনোদন
    • মতামত
    • সাহিত্য
    • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » অমর্ত্য সেন : চিন্তা ও পরিবর্তনের এক যাত্রী
    সাহিত্য

    অমর্ত্য সেন : চিন্তা ও পরিবর্তনের এক যাত্রী

    নাহিদOctober 8, 2024Updated:October 18, 2024
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    সময় তার অবিচ্ছিন্ন প্রবাহের সাথে প্রতিটি মানুষের জীবন থেকে পথে রেখে যায় নানা চিহ্ন, স্মৃতি, এবং অভিজ্ঞতা। অমর্ত্য সেনের জীবন যেন সেই সময়ের স্রোতে ভেসে চলা এক এমন গল্প, যেখানে প্রতিটি মোড়, প্রতিটি অধ্যায় আমাদের নতুন কিছু শেখায়। তাঁর চিন্তা এবং দর্শন যেমন বিশ্বজুড়ে সমাজ, অর্থনীতি ও নৈতিকতার জগতে নতুন আলো ফেলেছে, তেমনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ও স্মৃতির ভান্ডার ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং মানবিক দিক দিয়ে সোনালী রঙে রঞ্জিত।

    অমর্ত্য সেনের ফেলে আসা দিনগুলো তাঁর জীবন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং তাঁর চিন্তার ভিত্তি গড়ে তুলেছে। শৈশব থেকে শুরু করে জ্ঞানের শিখরে পৌঁছানোর এই যাত্রা অমর্ত্য সেনকে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করেছে।অমর্ত্য সেন কেবলমাত্র একজন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদই নন, বরং মানবিক মূল্যবোধের ধারকও ছিলেন।

    অমর্ত্য সেনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৩রা নভেম্বর, শান্তিনিকেতনের বুকে। তবে তাঁর শৈশবের একটি বড় অংশই কেটেছে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) মাটিতে। তাঁর পিতা আশুতোষ সেন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। তার মায়ের নাম অমিতা সেন। ফলে তাঁর পরিবার ঢাকার সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত ছিল। এই মাটির মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং দারিদ্র্যের মাঝে বেড়ে ওঠা অমর্ত্য সেনের ভেতর মানবিকতার বীজ বপন করেছিল।

    ছোটবেলায় অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনের প্রগতিশীল শিক্ষার পরিবেশে বড় হন। শান্তিনিকেতন ছিল এমন এক জায়গা, যেখানে প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি মানবিক চিন্তারও চর্চা হতো। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নীতি ও শিক্ষা পদ্ধতি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভীষণভাবে বিদ্যমান ছিল। এখান থেকেই অমর্ত্য সেনের মধ্যে বিকশিত হয়েছিল সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার বোধ এবং গণমানুষের জীবনের উন্নতির জন্য কাজ করার তাগিদ। তাঁর স্কুলের দিনগুলোতেও এই অনন্য পরিবেশ তাঁকে প্রভাবিত করেছিল, যা পরে তাঁর জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রতিফলিত হয়েছে।

    পূর্ববঙ্গে কাটানো অমর্ত্য সেনের শৈশব ছিল অনেক স্মৃতিতে ভরা, যা তাঁর চিন্তার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ছোটবেলায় তিনি দেখেছেন দারিদ্র্যের ভয়াবহতা, যা পরে তাঁর গবেষণা ও কাজের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। বিশেষ করে, ১৯৪৩ সালের বিখ্যাত “বাংলার মন্বন্তর” (বঙ্গীয় দুর্ভিক্ষ) তাঁকে গভীরভাবে নাড়িয়ে দেয়। এই মন্বন্তরে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান এবং কিশোর অমর্ত্য সেন কাছ থেকে এই মানবিক বিপর্যয়ের সাক্ষী হন। এই অভিজ্ঞতা তাঁর মধ্যে তীব্রভাবে দারিদ্র্য ও অনাহার দূরীকরণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের তাগিদ তৈরি করে।

    এই সময়ের অভিজ্ঞতাগুলোই তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছিল দারিদ্র্য এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণ ও সমাধান নিয়ে কাজ করতে। পূর্ববঙ্গের এই স্মৃতিগুলো অমর্ত্য সেনের মনে চিরস্থায়ী হয়ে রয়ে যায় এবং তাঁর অর্থনৈতিক গবেষণার এক বিশাল ভিত্তি তৈরি করে দেয়।

    শিক্ষার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ অমর্ত্য সেনকে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করে। সেখানে তিনি অর্থনীতি পড়তে শুরু করেন এবং দ্রুতই নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন। কলকাতায় অর্থনীতির পাঠ সমাপ্ত করে অমর্ত্য সেন পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা অর্থনীতিবিদদের সাথে কাজ করার সুযোগ পান।

    কেমব্রিজে তিনি কেবল অর্থনীতির শাখায় নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তাঁর আগ্রহ ছড়িয়ে পড়ে দর্শন, নৈতিকতা, ও রাজনীতি নিয়ে। এই সময়েই তিনি অর্থনীতি এবং নৈতিকতা নিয়ে গভীর চিন্তা শুরু করেন, যা পরবর্তীতে তাঁর গবেষণার মূল ভিত্তি হয়। কেমব্রিজের শিক্ষার পরিবেশ তাঁকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলে এবং তাঁর চিন্তার জগতে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করে।

    অমর্ত্য সেনের গবেষণা এবং কাজের মূল বিষয় ছিল দারিদ্র্য এবং অনাহার। তিনি বিশ্বাস করতেন যে দারিদ্র্য কেবলমাত্র অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি একটি নৈতিক সমস্যা। সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির মৌলিক অধিকারগুলো রক্ষা করা এবং তাদের ক্ষমতায়ন করা প্রয়োজন। তাঁর বিখ্যাত তত্ত্ব “ক্যাপেবিলিটি অ্যাপ্রোচ” (সামর্থ্য দৃষ্টিভঙ্গি) এই চিন্তার ফসল। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, মানুষের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটতে পারে তখনই, যখন সমাজের প্রতিটি মানুষ তাদের সামর্থ্য এবং সুযোগগুলো পূর্ণভাবে ব্যবহার করতে পারে। অমর্ত্য সেনের এ মডেল মানুষের কল্যাণ, উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার বোঝার জন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গি।

    এই তত্ত্ব অনুযায়ী, প্রকৃত উন্নতি তখনই ঘটে যখন মানুষ তাদের পছন্দ অনুযায়ী জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোতে অংশ নিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শুধুমাত্র পর্যাপ্ত শিক্ষা বা আয় থাকা নয়, বরং একজন মানুষ সেই শিক্ষা বা আয় ব্যবহার করে কতটা স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারে, সেটাই আসল বিষয়। তার মতে, উন্নয়ন মানে হলো এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে মানুষ তাদের ক্ষমতা বা সামর্থ্য অনুযায়ী নিজস্ব লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।

    ১৯৯৮ সালে তিনি অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান দারিদ্র্য এবং সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে তাঁর গবেষণার জন্য। তাঁর “সামর্থ্য দৃষ্টিভঙ্গি” এবং গণতন্ত্র, সুশাসন, এবং উন্নয়নের সম্পর্ক নিয়ে তাঁর কাজ বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়।

    অমর্ত্য সেনের ব্যক্তিগত জীবনও তাঁর পেশাদার জীবনের মতোই সমৃদ্ধ। তিনি ছিলেন একজন মানবিক মানুষ, যিনি কখনও শুধু নিজের জন্য চিন্তা করেননি। মানবতার সেবা এবং সমাজের কল্যাণের জন্যই তাঁর জীবন উৎসর্গিত ছিল। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিনবার বিয়ে করেছেন এবং তাঁর সন্তানরাও শিক্ষা এবং সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।

    অমর্ত্য সেনের জীবন এবং কাজ কেবলমাত্র শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি মানবতার জন্য এক আলো হয়ে আছেন, যে আলো দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার পথ দেখায়। তাঁর চিন্তা এবং দর্শন আমাদের শিখিয়ে দেয়, কেবলমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নই যথেষ্ট নয়—প্রকৃত উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি মানবিক মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারে। অমর্ত্য সেনের ব্যক্তিগত জীবন ও দর্শন খুবই সরল, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ। ছোটবেলায় পারিবারিক পরিবেশ ও শিক্ষা তাকে মানুষের প্রতি সহানুভূতি এবং ন্যায়বিচারের প্রতি উৎসাহী করেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, জীবনের প্রকৃত উন্নতি তখনই সম্ভব, যখন সমাজে সবার জন্য সমান সুযোগ ও অধিকার থাকবে। তার দর্শনে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি নয়, সামাজিক ন্যায়বিচারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করেন, শিক্ষার প্রসার ও স্বাস্থ্যের উন্নতি মানুষের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয়। ব্যক্তি হিসেবে তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন, কিন্তু তার চিন্তা ও কাজ বিশ্বকে নতুন দৃষ্টিকোণ দিয়েছে।

    অমর্ত্য সেনের জীবনপথ কেবল একটি ব্যক্তির সাফল্যের গল্প নয়, বরং এটি মানবতা, ন্যায়বিচার এবং সামাজিক সাম্যের এক দৃষ্টান্ত। তাঁর চিন্তা ও কাজ আমাদের শেখায় যে প্রকৃত উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন প্রতিটি মানুষ তার সামর্থ্য ও মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। দারিদ্র্য ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রাম বিশ্বব্যাপী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে এক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। অমর্ত্য সেনের জীবন আমাদের দেখায় কীভাবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে বৈশ্বিক চিন্তাধারার পথ তৈরি করা যায়, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আলোকিত করে।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সাহিত্য

    আশুরার দিন ঘিরে ঐতিহাসিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

    July 6, 2025
    আন্তর্জাতিক

    ইরানে আশুরা: ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রীয় বার্তার সেতুবন্ধন

    July 5, 2025
    সাহিত্য

    আশুরায় যেসব কাজ ইসলাম অনুমোদন করে না

    July 4, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025

    দেশের অর্থনৈতিক স্থবিরতা কি কেটে উঠা সম্ভব?

    অর্থনীতি May 29, 2025

    বাজেটের স্বাধীনতা: বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অন্যতম নিয়ামক

    আইন আদালত June 1, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2024 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.