ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত। ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন । আবহমান বাংলা সংস্কৃতিতে ফাল্গুন বা বসন্ত মানেই যেন চারদিকে নতুনের আহবান। উৎসবের ঘনঘাটা । সাহিত্যের নানা শাখায় পহেলা ফাল্গুন বা ঋতুরাজ বসন্তকে নিয়ে রয়েছে নানা রচনা। সম্প্রীতিকালে ‘হাওয়া’ সিনেমায় বসন্ত কালে বলতে না পারা আফসোসের গান সবার মুখে মুখে……………….
তুমি বন্ধু কালা পাখি
আমি যেন কি
বসন্ত কালে তোমায়
বলতে পারিনি
সাদা সাদা কালা কালা
রং জমেছে সাদা কালা,
সাদা সাদা কালা কালা
রং জমেছে সাদা কালা,
হইছি আমি মন পাগলা
বসন্ত কালে ..
তুমি বন্ধু কালা পাখি
আমি যেন কি ?
বসন্ত কালে তোমায়
বলতে পারিনি,
বসন্ত কালে তোমায়
বলতে পারিনি।
কিংবা ভাটিবাংলার গান-‘বসন্ত বাতাসে…. সই গো/ বসন্ত বাতাসে/বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে….।’
বাঙালি প্রেমের ঋতু বসন্ত এসে গেছে। ঝরা পাতার দিন শেষে গাছের শাখায় শাখায় উঁকি দেবে আজ কচি পাতা। প্রকৃতি সাজবে নতুনরূপে। শীতের খোলসে ঢুকে থাকা পলাশ, শিমূল, কাঞ্চন, পারিজাত, মাধবী, কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়া জেগে উঠবে অলৌকিক স্পর্শে।
বসন্তের উচ্ছলতা ও উন্মাদনায় ভাসবে নাগরিক বাঙালির মন। বসন্তের আনন্দযজ্ঞ চলবে শহর থেকে গ্রামীণ জীবনেও। বসন্তকে তারা আরও নিবিড়ভাবে বরণ করে। বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে বাঙালি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে। সর্বজনীন প্রাণের উৎসবে বাঙালি হৃদয় অনুভব করবে প্রেম-বিরহ আর নতুনের আবাহন।
শুধু নগর জীবনে নয়, বসন্তকাল এলেই গ্রাম বাংলার সর্বত্রই শুরু হয় মেলার মৌসুম। পুরো বসন্তকালে সারা দেশে বসে লোকজ মেলা। সেই সাথে লোকসংস্কৃতির অনন্য প্রতীক– কারুশিল্প, হস্তশিল্পের পণ্যের মেলা।
পহেলা ফাল্গুন বাংলা পঞ্জিকার একাদশতম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন ও বসন্তের প্রথম দিন। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন পালিত হয়। বসন্তকে বরণ করে নেয়ার জন্য বাংলাদেশে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। বাংলাদেশে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ এই দিনকে বরণ করতে চারুকলার বকুলতলায় এবং ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিবছর জাতীয় বসন্ত উৎসব আয়োজন করে। পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে এ দিন বসন্ত উৎসব পালন করা হয়।