Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Thu, Dec 18, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » একজন মায়াবতী (১৭ খন্ড)- ডাক্তার সাহেবের নাম শাহেদ মজুমদার: হুমায়ূন আহমেদ
    সাহিত্য

    একজন মায়াবতী (১৭ খন্ড)- ডাক্তার সাহেবের নাম শাহেদ মজুমদার: হুমায়ূন আহমেদ

    এফ. আর. ইমরানMarch 3, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    “ডাক্তার সাহেবের নাম শাহেদ মজুমদার”

    ডাক্তাররা কখনো পুরো নামে পরিচিত হন না। শাহেদ মজুমদার সেই কারণেই এস. মজুমদার নামে পরিচিত। বয়স চল্লিশের বেশি হবে না। এই বয়সেই প্রচুর খ্যাতি এবং অখ্যাতি কুড়িয়েছেন। ডাক্তার সাহেবকে মনজুরের পছন্দ। মানুষটি রসিক। রস ব্যাপারটা ডাক্তারদের মধ্যে খুব বেশি দেখা যায় না। প্রথম দিন মনজুর ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেছিল, ভাই আমি কি মারা যাচ্ছি নাকি?

    ডাক্তার সাহেব গভীর মুখে বলেছেন, হ্যাঁ যাচ্ছেন।

    মনজুর যখন পুরোপুরি হকচাকিয়ে গেছে তখন তিনি বলেছেন, ভয় পাবেন না। আমরা সবাই প্রাকৃতিক নিয়মে প্রায় ষাট বছর পর করে মারা যাচ্ছি–এই অর্থে বলেছি। নির্দিষ্ট সময়টুকু আপনি যাতে পান সে চেষ্টা আমি করব। এই আশ্বাস দিচ্ছি।

    আজ মনজুরকে তিনি অনেকক্ষণ ধরে দেখলেন। দেখা শেষ করে বললেন, আপনাকে কমপ্লিট বেডে চলে যেতে হবে। আগেও তো বলেছি। আপনি কথা শোনেন নি।

    মনজুর বলল, কিছু ঝামেলা ছিল, শেষ করেছি। এখন লম্বা হয়ে বিছনায় শুয়ে পড়ব।

    কবে শোবেন? আজ থেকেই শুরু করুন।

    আপনি বললে আজই শুয়ে পড়বা। ভালো কথা ডাক্তার সাহেব, আমার এই সমস্যায় কি মাথায় গণ্ডগোল হয়?’

    আপনার কথা বুঝতে পারছি না–মাথায় গণ্ডগোল মানে?

    মনজুর লাজুক গলায় বলল, আমার ঘরে একটা টেলিফোন আছে। হঠাৎ হঠাৎ সেই টেলিফোন বেজে ওঠে। বেজে উঠার কথা না। টেলিফোনটা অনেকদিন ধরেই ডেড। একটা ছেলের নাম ইমরুল, সে রাত দুটা আড়াইটার দিকে টেলিফোন করে। মজার মজার কথা বলে। আমি জানি এটা অসম্ভব না। আমার এক ধরনের হেলুসিনেশন হচ্ছে। আমি কি ঠিক বলছি ডাক্তার সাহেব?

    ঠিকই বলছেন। রক্তে টক্সিক মেটেরিয়াল বেড়ে গেলে হেলুসিনেশন হতে পারে। এরকম ঘটনার নজির আছে। ছেলেটার সঙ্গে কী কথা হয়?

    ছেলেমানুষি ধরনের কথা, গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।

    হয়তো পুরো ব্যাপারটা আপনি স্বপ্নে দেখেছেন।

    তাও হতে পারে।

    শেষ কবে টেলিফোন পেলেন?

    গতকাল রাত তিনটার দিকে। সে বলল, যে ছেলেটি আপনাকে কিডনি দিচ্ছে তার একমাত্র কিডনিটা যখন নষ্ট হয়ে যাবে তখন সে কী করবে?

    ডাক্তার সাহেব হেসে ফেলে বললেন, আপনার কথা শুনে তো মনে হয় না। ঐ ছেলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলে না। সে তো বেশ সিরিয়াস ধরনের কথা বলেছে। এই কথাগুলো নিশ্চয় আপনার মনেও আছে। আছে না?

    জ্বি আছে।

    এসব নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাবেন না। আপনার সাব-কনশাস মাইন্ড আপনাকে নিয়ে খেলছে। এটাকে গুরুত্ব দেয়া ঠিক হবে না। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনি যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন।

    তা দিচ্ছি। গুরুত্ব দেয়ার কারণও আছে। আমি কি কারণটা আপনাকে বলব?

    বলুন।

    কারণটা কোনো একজনকে বলা দরকার। আমি বলার মতো কাউকে পাচ্ছি না। সবাই কথা বলতে চায়। কেউ শুনতে চায় না।

    ডাক্তার সাহেব নরম গলায় বললেন, আমি আপনার কথা খুব আগ্রহ নিয়ে শুনছি। আপনি ধীরেসুস্থে বলুন।

    আমি আমানুল্লাহ ছেলেটির সঙ্গে নিজের খুব মিল দেখতে পাচ্ছি। সে একটি কিডনি বিক্রি করেছে। আমিও তাই করেছিলাম। আপনাকে এই তথ্য আগেই দিয়েছি। বাবার চিকিৎসার জন্যে এটা করতে হয়েছিল। তার থ্রোট ক্যানসার হয়েছিল। ক্যানসার হয়েছে জানার পর থেকে তিনি বাঁচার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠলেন। তার ধারণা হলো বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করলেই তিনি সেরে উঠবেন। টাকা টাকা করে তিনি একেবারে অস্থির হয়ে গেলেন। সারাক্ষণ বলতেন, এক লাখ টাকা হলেই বিদেশে গিয়ে জীবনটা রক্ষা করতাম। এই সময় আমি বাবাকে এক লাখ টাকা দেই। টাকা হাতে নেয়ার দুদিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়।

    তখনো আপনার কিডনি কেটে বাদ দেয়া হয় নি?

    জ্বি না। আমি ইচ্ছা করলে টাকাটা ফেরত দিতে পারতাম, বলতে পারতাম। আমি কিডনি বিক্রি করতে চাই না। তা করি নি। যথাসময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লেন্ট হয়। যাকে ঐ প্রসঙ্গ আমি যা বলতে চাচ্ছি তা হচ্ছে আমানুল্লাহ্ নামের ছেলেটিরও একই ব্যাপার ঘটছে। সে একটি কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকবে এবং একসময় দেখা যাবে আমার মতো সমস্যা হয়েছে।

    তেমন সম্ভাবনা খুবই কম।

    কম হলেও তো আছে। আছে না?

    ডাক্তার জবাব দিলেন না।

    মনজুর বলল, আপনার এখানে কি একটা সিগারেট খেতে পারি। প্রচণ্ড তৃষ্ণা হচ্ছে। যদি অনুমতি দেন।

    অনুমতি দিলাম।

    মনজুর সিগারেট ধরিয়ে প্রায় অস্পষ্ট স্বরে বলল, আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডাক্তার সাহেব–আমি ঐ ছেলেটির কিডনি নেব না। যে ক’দিন বাঁচব নিজের যা আছে তা নিয়েই বাঁচব।

    এই সিদ্ধান্ত কি এখন নিলেন?

    না। যেদিন আমানুল্লাহকে নগদ এক লাখ টাকা গুনে গুনে দিলাম। সেদিনই নিয়েছি। ডাক্তার সাহেব, আমার শরীরটা এখন বেশ খারাপ লাগছে। আপনি ব্যবস্থা করে দিন আমি আজ রাতেই হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পড়তে চাই–অসম্ভব ক্লান্ত লাগছে। জ্বর আসছে বলেও মনে হচ্ছে। প্লিজ একটু দেখবেন আমার গায়ে টেম্পারেচার আছে কিনা?

    মনজুর ডাক্তারের দিকে তার হাত বাড়িয়ে দিল। ডাক্তার সাহেব সেই হাত ধরলেন না। তিনি তাকিয়ে রইলেন মনজুরের দিকে। সেই চোখ কোমল ও শান্ত। অস্থিরতার কোনো ছাপ চোখের মণিতে নেই।

    মনজুর অপারেশন করতে রাজি নয়

    মনজুর অপারেশন করতে রাজি নয়।

    এই খবর জাহানারা পেয়েছে গতকাল রাতে। ফরিদ এসে খবর দিয়েছে। জাহানারা তৎক্ষণাৎ ফরিদকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে। কাঁদো কাঁদো গলায় বলেছে–ফরিদ এসব কী বলছে স্যার?

    মনজুর বলল, ও যা বলছে ঠিকই বলেছে। আমি অনেক ভেবেচিন্তে ডিসিশান নিয়েছি। এর নড়চড় হবে না। তুমি আমাকে অনুরোধ করো না বা কান্নাকাটিও করো না।

    জাহানারা হতভম্ব হয়ে গেল। এ রকম হতে পারে সে কল্পনাও করে নি। জাহানারা থাকতে থাকতেই বদরুল সাহেব এলেন। ঘরে ঢুকেই তিনি রাগী গলায় বললেন, তুই কি পাগল হয়ে গেলি?

    মনজুর হাসতে হাসতে বলল, হ্যাঁ।

    ঐ এক লাখ টাকার কী হবে? ঐ টাকা তো আর উদ্ধার হবে না।

    তা হবে না। মামা, টাকাটা আমি দান করেছি।

    তুই পাগল, ষোল আনা পাগল।

    মনজুর ক্লান্ত গলায় বলল, মামা আমার শরীরটা খুবই খারাপ। তোমার চিৎকারে আরো খারাপ হচ্ছে। দয়া করে বিদেয় হও।

    বদরুল আলম নড়লেন না। জাহানারা বের হয়ে এল। ফরিদকে হাসপাতালে রেখে একা এল মীরার কাছে।

    জাহানারা মীরার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

    সে অসম্ভব ভয় পেয়েছে। তার মুখ পাণ্ডুবর্ণ। সারা পথই সে এসেছে কাঁদতে কাঁদতে। তার চোখ ফোলা। মুখ অসম্ভব বিষগ্ন।

    মীরা বলল, আমি বললেই কি মনজুর আমার কথা শুনবে?

    জাহানারা ধরা গলায় বলল, হ্যাঁ আপনি বললে শুনবে।

    আপনি কী করে জানেন?

    আমি জানি। আপনি স্যারের হাত ধরে যদি একবার বলেন, স্যার রাজি হবেন। কিডনি আমি দেব। সেটা কোনো সমস্যাই না। আপনি শুধু স্যারকে রাজি করবেন। বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করার কোনো মানে হয় না।

    সেটা আপনি জানেন, আমিও জানি। কিন্তু ও জানে না। ওর কিছু নিজস্ব বিচিত্র লজিক আছে। সে ঐ লজিকে চলে। অন্য কারো কথাই শোনে না। আমার কথাও শুনবে না।

    আপনার কথা শুনবেন। আপনার কথা না শুনে স্যারের উপায় নেই।

    এত নিশ্চিত হয়ে কী করে বলছেন?

    স্যারের রাইটিং প্যাডের একটা পাতা আমি আপনার জন্যে নিয়ে এসেছি। ঐটা দেখলেই আপনি বুঝবেন তিনি আপনার কথা ফেলবেন না।

    জাহানারা রাইটিং প্যাডের একটা পাতা মীরার দিকে বাড়িয়ে ধরল। সেখানে গুটি গুটি করে অসংখ্যবার লেখা–মীরা, মীরা, মীরা।

    জাহানারা বলল, মোট তিনশ ছ’বার লেখা আছে।

    আপনি বসে বসে গুনেছেন?

    জ্বি।

    মীরা জাহানারার দিকে কিছুক্ষণ অপলকে তাকিয়ে রইল। মীরার মুখে ক্ষীণ হাসির রেখা দেখা গেল। এই হাসি সে তৎক্ষণাৎ মুছে ফেলে স্বাভাবিক গলায় বলল, আপনার স্যারকে আপনার খুব পছন্দ তাই না?

    জাহানারা সহজ গলায় বলল হ্যাঁ।

    কোন পছন্দ সেটা কি জানেন?

    জানি।

    আমাকে বলবেন?

    জাহানারা স্পষ্ট স্বরে বলল, না।

    মীরা বলল, আচ্ছা থাক বলতে হবে না। সবকিছু বলতে নেই। চলুন আপনার স্যারের কাছে। যাই। দেখি তাকে রাজি করানো যায় কিনা। ওর সঙ্গে প্ৰথম যেদিন দেখা হয় তখন আমার পরনে আসমানি রঙের একটা শাড়ি ছিল। ঐ শাড়িটা পরে গেলে কেমন হয়।

    খুব ভালো হয়।

    আপনি তাহলে অপেক্ষা করুন, আমি শাড়ি বদলে আসছি। আর শুনুন, এত কাঁদবেন না। আপনার কান্না দেখে আমারই কান্না পেয়ে যাচ্ছে। দেখি, কাছে আসুন তো আপনাকে একটু আদর করে দিই।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সাহিত্য

    শুভ জন্মদিন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ

    November 13, 2025
    সাহিত্য

    ডাকটিকিটে ফুটে উঠেছে হারানো যুগের গল্প

    October 10, 2025
    ফিচার

    পবিত্র রমজানের সম্ভাব্য তারিখ জানাল জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

    October 4, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.