আজ বৃহস্পতিবার রাতে পালিত হবে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবেকদর। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই মহিমান্বিত রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদার মধ্য দিয়ে সারা দেশে মুসল্লিরা রাতভর নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার ও দোয়া মাহফিলে মশগুল থাকবেন।
শবেকদরের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব-
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, লাইলাতুল কদর এমন এক রাত, যখন আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। এই রাত সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি ঈমান ও আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কদরের রাতে ইবাদত করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বোখারি)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশ দিন ইবাদতে আরও বেশি মগ্ন থাকতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী করিম (সা.) শেষ দশকে ইবাদত বাড়িয়ে দিতেন এবং পরিবারের সদস্যদেরও বেশি বেশি ইবাদতের জন্য উৎসাহিত করতেন।
শবেকদর চেনার লক্ষণ-
হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, শবেকদর রাতের কিছু বিশেষ আলামত রয়েছে। এই রাতে আকাশ থাকবে নির্মল, চাঁদ হবে উজ্জ্বল, বাতাস থাকবে স্নিগ্ধ এবং পরিবেশ হবে শান্তিপূর্ণ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, শবেকদরের আলামত হলো, স্বচ্ছ রাত, যাতে চাঁদ হবে উজ্জ্বল এবং আবহাওয়া থাকবে প্রশান্তিময়- গরমও নয়, ঠান্ডাও নয়। সকালবেলা সূর্য নিস্তেজ আভাযুক্ত হয়ে উঠবে। (মুসনাদ আহমদ: ২২৭৬৫)।
করণীয় ইবাদত-
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই রাতে বেশি বেশি আমল করার নির্দেশনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তাহাজ্জুদ, সালাতুত তাসবিহ, তওবার নামাজ, সালাতুল হাজত, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দান-সদকা, দোয়া এবং আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “হে আল্লাহর রাসুল, যদি আমি শবেকদরের সন্ধান পাই- তাহলে কী দোয়া করব?”
উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআফু আন্নি।” অর্থাৎ “হে আল্লাহ, তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করতে ভালোবাসো, অতএব আমাকে ক্ষমা করো।” (জামে তিরমিজি)।
সারাদেশে বিশেষ আয়োজন-
পবিত্র শবেকদর উপলক্ষে দেশের মসজিদগুলোতে বিশেষ ইবাদতের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন থাকছে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা রাতভর ইবাদতে অংশ নিয়ে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা কামনা করবেন।
- লেখক: এফ.আর. ইমরান

