টানা নিম্নমুখিতার পর ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে। বাজারে দেখা যাচ্ছে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। বিশেষ করে গতকাল ছিল বেশ ইতিবাচক এক দিন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ১ দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টে। আগের কার্যদিবসে এটি ছিল ৪ হাজার ৯৮২ পয়েন্ট।
আট মাস পর বড় লেনদেন
ডিএসইতে গতকাল প্রায় আট মাস পর লেনদেন ছুঁয়েছে ৬৯০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে এই অঙ্ক ছিল ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
দিনভর সূচকের গতি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। দিনের শেষে ডিএস-৩০ সূচক বেড়েছে ১৮ দশমিক ৮ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে। একইভাবে ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট, যা এখন ১ হাজার ৯৪ পয়েন্ট।
বাজারে মূল চালিকাশক্তি
গতকালের বাজারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রেখেছে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—
- ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ
- ন্যাশনাল ব্যাংক
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো
- ইস্টার্ন ব্যাংক
- ব্র্যাক ব্যাংক
ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ড লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৭৩টির, কমেছে ৭৬টির, অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টি।
খাতভিত্তিক চিত্র
খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়,
- সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ব্যাংক খাতে— ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ
- দ্বিতীয় অবস্থানে ওষুধ ও রসায়ন খাত— ১২ দশমিক ৭ শতাংশ
- এরপর খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং প্রকৌশল খাত, যথাক্রমে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ করে
- বস্ত্র খাত ছিল পঞ্চম, ৮ দশমিক ২ শতাংশ লেনদেন
সব খাতেই এসেছে ইতিবাচক রিটার্ন।
- জীবন বীমা খাত সবচেয়ে এগিয়ে— ৪ দশমিক ৩ শতাংশ
- সিরামিক খাত— ২ দশমিক ৯ শতাংশ
- ভ্রমণ ও অবকাশ— ২ দশমিক ৮ শতাংশ
- পাট খাত— ২ দশমিক ৫ শতাংশ
- প্রকৌশল খাত— ২ দশমিক ৩ শতাংশ
চট্টগ্রামেও ইতিবাচক ধারা
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) থেকেও এসেছে সুখবর।
- নির্বাচিত সূচক সিএসসিএএক্স বেড়েছে ৭৪ দশমিক ১ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫৩৬ পয়েন্টে
- সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে ১৩০ পয়েন্ট, এখন ১৩ হাজার ৯৬০ পয়েন্ট
সিএসইতে ৪৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল মাত্র ৭ কোটি টাকা। অংশ নেওয়া ২৩৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে ১৫১টির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৮টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টি।
বিনিয়োগকারীদের মনোভাব
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত রপ্তানি শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও দেশের বাজারে তা বড় প্রভাব ফেলেনি। বরং বাজারে ছিল শেয়ার কেনার চাপ। যার প্রভাবে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকেছে সারাদিন।
বিশ্লেষকদের মতে, সামগ্রিকভাবে এটি বাজারে আস্থার ফিরে আসার ইঙ্গিত। ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে।